তিনজনের এই বিবাদ শেষ হয় মাস্কের পোস্টে, সেখানে তিনি পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ‘ছোটলোক’ বলে গাল দেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও টেক ধনকুবের ইলন মাস্ক ইউক্রেইনে উপগ্রভিত্তিক ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থাপনা স্টারলিংকের ব্যবহার নিয়ে পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্ল সিকোরস্কির সঙ্গে তুমুল বাদানুবাদে জড়িয়েছেন।
রোববার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে সিরিজ পোস্টে এই বাদানুবাদ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মাস্ক তার পোস্টে ইউক্রেইনে উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিলে এর প্রতিক্রিয়ায় সিকোরস্কি বলেন, স্টারলিংক বন্ধের যে কোনো হুমকির পর লোকে অন্য সরবরাহকারী খোঁজা শুরু করবে।
রুবিও পরে এই কথার লড়াইয়ে ঢুকে পড়েন এবং বলেন, মাস্ক স্টারলিংক বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেননি। তিনি সিকোরস্কিকে ‘কৃতজ্ঞ’ থাকারও আহ্বান জানান।
তিনজনের এই লড়াই শেষ হয় মাস্কের পোস্টে, সেখানে তিনি পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ‘ছোটলোক’ বলে গাল দেন।
স্টারলিংকের এই ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা মাস্কের মহাকাশ প্রযুক্তি সংস্থা স্পেসএক্সের এটি উদ্যোগ, যার সাহায্যে বিশ্বজুড়ে দুর্গম ও যুদ্ধক্ষেত্রের মতো বিপজ্জনক জায়গায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া সম্ভব।
রোববারের এই বাদানুবাদ শুরু হয় মাস্কের একটি পোস্টে, যেখানে টেসলাপ্রধান স্টারলিংককে ‘ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড’ অ্যাখ্যা দেন।
“যদি এটি আমি বন্ধ করে দিই তাহলে পুরো ফ্রন্ট লাইন ভেঙে পড়বে,” লিখেছেন তিনি।
এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় সিকোরস্কি লেখেন, ইউক্রেইনে এই সেবা ব্যবহারের খরচ পোল্যান্ড বহন করছে।
“ইউক্রেইনে স্টারলিংকের জন্য পোলিশ ডিজিটাইজেশন মন্ত্রণালয় বছরে ৫ কোটি ডলার করে দিচ্ছে। আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্তকে হুমকি দেওয়া ঠিক হচ্ছে কিনা, এই প্রশ্ন সরিয়ে রাখলেও বলতে হয়, যদি স্পেসএক্স অবিশ্বস্ত বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে আমরা অন্য সরবরাহকারী খুঁজতে বাধ্য হবো,” পোস্টে এমনটাই বলেন এ পোলিশ মন্ত্রী।
এর পরই মঞ্চে আবির্ভাব ঘটে রুবিও’র। তিনি বলেন, সিকোরস্কি মনগড়া কথা চাপিয়ে দিচ্ছেন।
“ইউক্রেইনে স্টারলিংক বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি কেউ দেয়নি। উল্টো ধন্যবাদ দেওয়া উচিত, কেননা স্টারলিংক ছাড়া ইউক্রেইন অনেক আগেই এই যুদ্ধে হেরে বসতো এবং রাশিয়ানরা হয়তো এখন পোল্যান্ড সীমান্তে থাকতো,” বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মাস্ক শেষে সিকোরস্কিকে ‘ছোটলোক’ অ্যাখ্যা দেন।
“শান্ত হও, ছোটলোক। তোমরা খরচের সামান্য অংশ দিচ্ছে। আর স্টারলিংকের কোনো বিকল্প নেই,” লেখেন মাস্ক।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে স্টারলিংকের টার্মিনালগুলো ইউক্রেইনের সেনাদের ব্যাপক সহায়তা করছে। রাশিয়া আক্রমণ শুরু করলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই কিইভ এই টার্মিনাল ব্যবহার শুরু করে।
ইউক্রেইনে এখন হাজার হাজার স্টারলিংক টার্মিনাল, যার মধ্যে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেনা ৫০০টি টার্মিনালও আছে।