ড্রোন-অ্যাপ দিয়ে যেভাবে হিজাববিহীন নারীদের ধরছে ইরান

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৪:১৬

ইরান নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাব আইন কার্যকর করতে ব্যাপকভাবে প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারির মাধ্যমে এই কঠোর পোশাক বিধি লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি দিচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ইরানের প্রযুক্তির ঈপর নির্ভরশীলতার উদ্বেগজনক পরিমাণ তুলে ধরা হয়েছে, যা নারীদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ‘নাজের’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, যা সরকারি সহায়তায় তৈরি একটি টুল। এর মাধ্যমে নাগরিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নারীদের হিজাব আইন লঙ্ঘনের জন্য অভিযোগ জানাতে পারে। এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপলোড করার সুযোগ দেয়, যেমন গাড়ির নম্বর প্লেট, অবস্থান ও সময়। এসব তথ্য পরে অনলাইনে গাড়িগুলো ‘ফ্ল্যাগ’ করতে ও কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করতে ব্যবহার করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপ্লিকেশনটি গাড়ির নিবন্ধিত মালিককে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠায়, তাদের বিধি লঙ্ঘনের জন্য সতর্ক করে এবং সতর্কতাগুলো উপেক্ষা করলে গাড়ি জব্দ করার হুমকি দেয়। এই অত্যন্ত নজরদারি পদ্ধতিটি অ্যাম্বুল্যান্স, ট্যাক্সি ও পাবলিক ট্রান্সপোর্টে নারীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য সম্প্রসারিত করা হয়েছে, যা তাদের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন আরো ক্ষুণ্ণ করছে।
‘নাজের’ অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি ইরানি কর্তৃপক্ষ তেহরান ও দক্ষিণ ইরানে জনসমাগমস্থলে নজরদারি ও হিজাবের আনুগত্য নিশ্চিত করতে ড্রোন ব্যবহার করছে। তেহরানের আমিরকাবির বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যারও ইনস্টল করা হয়েছে, যা নারী শিক্ষার্থীদের নজরদারি করে ও তাদের পোশাকবিধির প্রতি আনুগত্য নিশ্চিত করে।
জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদনে ইরানের পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সমালোচনা করেছে, বিশেষ করে তাদের ভিন্নমত দমন এবং নারী ও কিশোরীদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টি তুলে ধরেছে।