কাশ্মীরে হামলার সময় বেছে বেছে পুরুষদের ওপর গুলি চালানো হয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২১:৫৬

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীরা হামলা চালানোর সময় নারী-পুরুষদের আলাদা করে বেছে বেছে পুরুষদের লক্ষ্য করে গুলি করছিল। পর্যটক বাস থেকে নামার পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা ভয়াবহ সেই মুহূর্তগুলোর বর্ণনা দিচ্ছিলেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি। খবর বিবিসির।
বন্দুকধারীদের গুলিতে সেখানে কমপক্ষে ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আহতদের সংখ্যা অনেক। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পহেলগাম থেকে তিন মাইল দূরে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত বৈসারণে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক নারীর বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস খবর প্রকাশ করেছে। তিনি জানিয়েছেন, হামলাকারীরা পুরুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছিল। তার স্বামীও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।'
হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বন্দুকধারীরা পুরুষদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছিল এবং নারীদের ছেড়ে দিচ্ছিল। এক নারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, হামলাকারীরা ঠিক কতজন তা আমি বলতে পারছি না। একটি খোলা ছোট তৃণভূমির কাছের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে তারা গুলি চালাতে শুরু করে।
তিনি বলেন, স্পষ্টতই তারা নারীদের ছাড় দিচ্ছিলেন এবং পুরুষদের দিকে গুলি চালাতে থাকলো, কখনও একটি একটি করে, আবার কখনও একাধারে গুলি চলছিল ঠিক ঝড়ের মতো।
ভারতীয় সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পল্লবী রায় নামে আরেক নারীকে চিহ্নিত করেছে। তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তিনিও বলেছেন যে, পুরুষদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। প্রথম গুলির শব্দের পর লোকজন চিৎকার করতে থাকে এবং দৌড়াতে শুরু করে।
যদিও কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের কেন্দ্রস্থল, তবুও পর্যটকদের ওপর আক্রমণের ঘটনা বিরল। ওই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, মঙ্গলবারের হামলা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর পরিচালিত যেকোনো হামলার চেয়ে অনেক বড়।

কড়া নিরাপত্তা জারি
পহালগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর উপত্যকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দিল্লিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হামলার পর দিল্লি পুলিশ শহরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
বিশেষ করে পর্যটন স্থান এবং শহরের সীমান্তে কঠোর তল্লাশি এবং নজরদারি চালানো হচ্ছে যাতে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যায়। অন্যদিকে, উপত্যকার নিরাপত্তা কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে যানবাহন তল্লাশি করছেন এবং রাস্তাগুলোতে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের অনেক এলাকা থেকেও হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হচ্ছে।