ফিলিস্তিন অঞ্চলে পূর্ণ মাত্রার স্থলযুদ্ধ শুরু করার ইসরায়েলি হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্র ৬ লাখ আমেরিকানকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থল সেনা পাঠানোর পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষ ওই অঞ্চল থেকে নিজ নাগরিকদের সরিয়ে নিতে একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনা তৈরি করেছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম গুলো জানিয়েছে।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম গুলোর খবরে জানানো হয়, বাইডেন প্রশাসন বিশ্বাস করে ‘সবকিছুর জন্য একটি পরিকল্পনা না থাকা দায়িত্বজ্ঞানহীন হবে’। যদিও ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুসারে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতেই কেবল এই পূর্ণমাত্রার এয়ারলিফ্ট বিবেচনা করা হতে পারে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট মনে করে যে ইসরায়েলে প্রায় ৬ লাখ আমেরিকান নাগরিক রয়েছে, যদিও তাদের অনেকেই দ্বৈত নাগরিক। ধারণা করা হয় ৭ অক্টোবর হামাস যখন ইসরায়েলে হামলা শুরু করে তখন আরও ৮৬ হাজার মার্কিন নাগরিক লেবাননে অবস্থান করছিল।
যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোও এই অঞ্চলে তাদের নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং ইসরায়েল ও গাজা উভয়ে অঞ্চল ভ্রমণের বিরুদ্ধে পরামর্শ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য উভয়ই এই অঞ্চলের হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েলের উপর নতুন করে আক্রমণ শুরু না করা এবং গাজার বাইরে এই সংঘাতকে ছাড়িয়ে না দিতে অনুরোধ করেছে।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ধারাবাহিকতায় ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে লেবানিজ সীমান্তে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
সিরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীও সম্প্রতি ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত হামলার শিকার হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন হামাস এবং আইডিএফ-এর মধ্যে সংঘর্ষের প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা সমগ্র অঞ্চল জুড়ে আমাদের সৈন্য এবং আমাদের জনগণের উপর আক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছি এবং যার কারণে আমাদের সৈন্যরা যাতে ভাল অবস্থানে থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা যা যা করা দরকার তা করে যাচ্ছি। তারা সুরক্ষিত এবং আমাদের পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষমতা আছে।
ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের পররাষ্ট্র নীতির পরিচালক সুজান ম্যালোনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ইসরায়েলে অবস্থানরত ৬ লাখ আমেরিকান এবং মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে হুমকির মুখে থাকা অন্যান্য আমেরিকানদের সড়িয়ে আনার অভিযানের আকার, সুযোগ এবং জটিলতা নিয়ে চিন্তা করাই একটি কঠিন ব্যাপার।
২০২১ সালে আফগান সরকারের পতনের পর মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র দপ্তর কাবুল থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের পরিবহন বিমানের মাধ্যমে সরিয়ে নিতে একটি বড় আকারের সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করেছিল।
ইজিজেট, রায়নায়ার, উইজ এয়ার, এয়ার ফ্রান্স, লুফথানসা এবং এমিরেটস ইসরায়েলে তাদের ফ্লাইট বাতিল করলেও ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ বর্তমানে প্রতিদিন তেল আবিব থেকে লন্ডনে একটি সরাসরি ফ্লাইট চালাচ্ছে। বাণিজ্যিক ফ্লাইট সংকট থাকলেও মার্কিন সরকার বলেছে গত সপ্তাহে ৯০০ জনেরও বেশি নাগরিককে ইসরায়েল থেকে আকাশপথে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।