পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে তার ছেলেদের টেলিফোনে কথা বলার এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসলামাবাদের একটি বিশেষ আদালত। মঙ্গলবার (১৩ মে) আদালত আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ দেয়।
গত মাসে ইসলামাবাদের বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ কারাবন্দী ইমরান খানের পক্ষে করা দুটি আবেদন অনুমোদন করেন। এসব আবেদনে বিদেশে অবস্থানরত ছেলেদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আদালত তখন এ সুবিধাগুলো দেওয়ার বিষয়ে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন।
কারা কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিল। গতকাল এ আবেদনের বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়। পরে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।
সোমবার (১২ মে) ইসলামাবাদ আদালতে করা এক আবেদনে আদিয়ালা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক দাবি করেন, গত ১০ জানুয়ারি ও ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতের দেওয়া আদেশগুলো ‘বন্দীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অবিচ্ছেদ্য সমান অধিকারের নীতির পরিপন্থি’। তার যুক্তি হলো, ইমরানকে এ দুই বিশেষ সুবিধা দেওয়া সংবিধানের চেতনা ও পাকিস্তানের কারা বিধিমালার পরিপন্থি হবে।
বুধবার (১৪ মে) আদালতের আদেশের কপি পেয়েছে ডন। এতে বলা হয়, জানুয়ারির ১০ ও ২৮ তারিখ এবং ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে দেওয়া আদেশগুলো সব প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করেই দেওয়া হয়েছে। যথোপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারায় কারা তত্ত্বাবধায়কের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
আদালতের দেওয়া তিনটি আদেশ কঠোরভাবে মেনে চলতে কারা তত্ত্বাবধায়ককে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২০ মে) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
আদালতের আদেশের ঠিক এক দিন আগে ইমরান খানের দুই ছেলে ২৮ বছর বয়সী সুলেমান খান ও ২৬ বছর বয়সী কাসিম খান জনসমক্ষে উপস্থিত হন। তারা তাদের বাবার কারাবন্দিত্বের বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুলেমান ও কাসিম বাবার মুক্তির দাবি জানান।
ইমরান খানের দুই ছেলের অভিযোগ, তারা সীমিত সময়ের জন্য বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পান। এছাড়া যে সময়ে কথা বলতে দেওয়া হয়, সেটি কথা বলার জন্য উপযোগী সময়ও নয়। একবার ফোনকল মিস করলেই আবার কথা বলার জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়। বাবার সঙ্গে দুই বা তিন মাস অন্তর একবার কথা বলার সুযোগ হয় বলে দাবি করেন তারা।
ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দী আছেন। বর্তমানে তিনি ১৯ কোটি পাউন্ড দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে আদিয়ালা কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন।
সূত্র: ডন