শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত : শাহবাজ শরিফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৬ মে ২০২৫, ১১:৪৩

সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষ সত্ত্বেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বৃহস্পতিবার ভারতের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। শাহবাজ শরিফ জোর দিয়ে বলেছেন, কাশ্মীর সমস্যা সমাধান স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার পর তার এই বক্তব্য সামনে এসেছে। 
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের সঙ্গে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য’ আলোচনায় বসার ইচ্ছার কথা বলেন।
যদিও দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষের পর উত্তেজনা চরমে রয়েছে। 
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কামরা বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় শাহবাজ বলেন, ‘আমরা শান্তির জন্য তাদের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত।’ উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং বিমানবাহিনী প্রধান মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিধুসহ শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। সেখানে তিনি ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে জড়িত অফিসার এবং সেনাদের সঙ্গে দেখা করেন।
তবে শাহবাজ শরিফ পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে ‘শান্তির শর্তগুলোর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধান অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। কারণ ভারত সর্বদা বলে আসছে, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো তার অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ‘অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস’-এর সফলতাকে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী যে কঠোর ও শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
’ জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এ খবর। বুধবার (১৪ মে) শিয়ালকোটের পাসরুর সেনানিবাসে ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’-এ অংশ নেওয়া সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব মন্তব্য করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। 
পাকিস্তানে ভারতের পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকির জবাবে শাহবাজ বলেন, যদি ভারত পাকিস্তানে পানি বন্ধ করার চিন্তা করে। তাহলে জেনে রাখুন- পানি ও রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না। এটি আমাদের সীমারেখা।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন,  কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার একমাত্র বিষয় হলো পাকিস্তানের (পিওকে) অবৈধ দখলে থাকা জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু অংশ ফিরিয়ে দেওয়া। 
তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে (পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর প্রত্যাবর্তন) আলোচনা করতে উন্মুক্ত। তাই আমি চাই আপনি আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করুন। সরকারের অবস্থান খুবই স্পষ্ট।’
তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এবং লেনদেন শুধু দ্বিপক্ষীয় থাকবে, সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারতে আক্রমণের অভিযোগে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য জয়শঙ্কর পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান। 
জয়শঙ্কর জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুধু সন্ত্রাসবাদের ওপরই হবে। পাকিস্তানের কাছে সন্ত্রাসীদের একটি তালিকা রয়েছে, যাদের হস্তান্তর করতে হবে এবং তাদের সন্ত্রাসীদের পরিকাঠামো বন্ধ করতে হবে। তারা (পাকিস্তান) জানে কী করতে হবে। সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে কী করা উচিত তা নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। এই আলোচনাগুলোই সম্ভব।’ 
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া