চীনের রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৭ মে ২০২৫, ২২:৪১

চীনের পূর্বাঞ্চলের শানডং প্রদেশে একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে গাওমি শহরের শানডং ইউডাও কেমিক্যাল কারখানার একটি ওয়ার্কশপে এ বিস্ফোরণ ঘটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এবং রয়টার্স বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিস্ফোরণের পরপরই আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধূসর ও কমলা রঙের ঘন ধোঁয়া, যা আশপাশের এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বিস্ফোরণে কারখানার আশপাশের ভবনের জানালাগুলো ভেঙে পড়ে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও রেসকিউ দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মোট ৫৫টি যানবাহন ও ২৩২ জন কর্মী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া চীনের জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকেও একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ ও অতিরিক্ত উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর নিশ্চিত করেনি চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি হোটেলের কর্মী জানান, দুপুরে তিনি একটি প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পান। অন্যদিকে, ৬ কিলোমিটার দূরের এক কারখানার কর্মী বলেন, ‘একটি ভয়ংকর বুম শব্দ শোনা যায় এবং পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। বাতাসের তীব্র স্রোতে আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি।’
ওই কর্মী, যার নাম মেং, বলেন, ‘বিস্ফোরণের ধাক্কায় জানালা-দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি যদি আরও কাছে থাকতাম, হয়তো দেয়ালে ছিটকে পড়তাম।’
শানডং ইউডাও কেমিক্যাল হচ্ছে হিমাইল গ্রুপ-এর মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান, যারা হিমাইল মেকানিক্যাল নামের একটি লিস্টেড কোম্পানিরও মালিক। বিস্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর হিমাইল মেকানিক্যালের শেয়ারের দাম প্রায় ৪ শতাংশ কমে যায়।
২০১৯ সালের আগস্টে প্রতিষ্ঠিত ইউডাও কেমিক্যাল কারখানাটি গাওমি রেনহে কেমিক্যাল পার্কে প্রায় ৪৬ হেক্টর জমির ওপর গড়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি কীটনাশক, ফার্মাসিউটিক্যালস ও অন্যান্য রাসায়নিক পণ্য উৎপাদন করে।
উল্লেখ্য, চীনে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা নতুন নয়। ২০১৫ সালে তিয়ানজিন শহরে একটি রাসায়নিক গুদামে সিরিজ বিস্ফোরণে ১০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারায় এবং বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হয়।
বর্তমান গাওমি বিস্ফোরণও সেই ভয়াবহ ঘটনার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে দেশটির নাগরিকদের মাঝে। পরিস্থিতির আরও উন্নয়ন ও বিস্তারিত জানার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।


সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন