পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হারার পর পদত্যাগ করেছেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভাসাল্লামস্রাইন ওয়ুন-এর্দেন। তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কয়েক দিনের গণবিক্ষোভের পর এ আস্থা ভোট হলো। খবর বিবিসির।
ওয়ুন-এর্দেনের ছেলের জাঁকজমকপূর্ণ জন্মদিনের পার্টি ও বাগদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা ঐ গণবিক্ষোভউসকে দিয়েছিল। ২০২১ সালে ক্ষমতায় বসা ওষুন-এর্দেন পদত্যাগ করলেও আপাতত তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার উত্তরসূরি বেছে নেওয়া হবে। আস্থা ভোটের পর ওয়ন-এদেন বলেছেন-মহামারি, যুদ্ধ ও শুল্কসহ কঠিন সময়ে দেশ ও জাতির সেবা করাটা ছিল সম্মানের।
১২৬ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে তার ন্যূনতম ৬৪ ভোট লাগত। কিন্তু আস্থা ভোটে রায়ই জানান ৮২ আইনপ্রণেতা। তার মধ্যে ৪৪ জন ওয়ন-এর্দেনের পক্ষ নেন, ৩৮ জন যান বিপক্ষে। পরে মঙ্গলবার মঙ্গোলিয়া পার্লামেন্ট জানায়, অনাস্থা প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত না হওয়ায় ওষুন-এর্দেন নিজেই পদত্যাগ করেছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
ভোটের আগে দুই সপ্তাহ ধরে ওষুন-এর্দেনের পদত্যাগ দাবিতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ দেখেছে মঙ্গোলিয়া। এসব বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই বয়সে তরুণ। বিক্ষোভকারীরা ওষুন-এর্দেনের ছেলের জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপনের দিকে আঙুল তুলে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ওয়ন-এর্দেন তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বিরোধীরা তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে পালটা অভিযোগ করেছেন। গত মাসে তার বিরুদ্ধে রাজধানী উলানবাটারের সুখবাটার চত্বরেও বিক্ষোভহয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ওয়ন-এর্দেন ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতি পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সরকারি স্বচ্ছতার দিক থেকে গত বছর দেশটি ১৮০টি দেশের মধ্যে ১১৪তম হয়েছিল।
চীন ও রাশিয়ার মধ্যে 'স্যান্ডউইচ' হয়ে থাকা সাবেক এ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি ১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গণতন্ত্রে রূ পান্তরের পথে থাকলেও দুর্নীতিই এখন তাদের অন্যতম প্রধান সমস্যা।