ওড়ার তিন সেকেন্ড পরই এয়ার ইন্ডিয়ার জ্বালানি সুইচ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:৩১
ভারতের ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বিধ্বস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। ফাইল ছবি

ভারতের আহমেদাবাদে গত মাসে বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের তিন সেকেন্ড পরই ইঞ্জিনের জ্বালানি সুইচগুলো প্রায় একই সঙ্গে ‘চালু’ অবস্থা থেকে ‘বন্ধ’ অবস্থায় চলে গিয়েছিল। এতে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আজ শনিবার প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে।
গত ১২ জুন লন্ডনগামী ওই উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হন। আজ ভারতের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনাবিষয়ক তদন্তকারীরা একটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির গতি দ্রুত কমতে শুরু করে এবং নিচের দিকে নামতে থাকে।
ভারতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত কী কারণে, বিশেষজ্ঞরা যা ভাবছেন
ককপিট ভয়েস রেকর্ডারের কথোপকথন বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার সময় উড়োজাহাজটির এক পাইলট অপর পাইলটকে জিজ্ঞাসা করছিলেন যে তিনি কেন জ্বালানি বন্ধ করেছেন। জবাবে অপর পাইলট বলেন, তিনি জ্বালানি বন্ধ করেননি।
কোনটি ফ্লাইট ক্যাপ্টেনের কথা আর কোনটি ফার্স্ট অফিসারের কথা, তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া দুর্ঘটনার আগে, ঠিক কোন পাইলট ‘মে ডে’ বিপৎসংকেত পাঠিয়েছিলেন, সেটি প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়নি। লন্ডনগামী উড়োজাহাজটির জ্বালানি সুইচ কীভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় চলে গেল, তা–ও সেখানে বলা হয়নি।
উড়োজাহাজের নিরাপত্তাবিষয়ক মার্কিন বিশেষজ্ঞ জন কক্স বলেন, একজন পাইলটের পক্ষে ভুল করেও ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহকারী এই সুইচগুলো নাড়ানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, একটু নড়াচড়া করলেই সুইচগুলো সরে যায়, বিষয়টা এমন নয়।
জ্বালানি সুইচগুলো বিচ্ছিন্ন হলে ইঞ্জিন প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণত একটি উড়োজাহাজ নির্ধারিত গন্তব্যস্থল, অর্থাৎ বিমানবন্দরের ফটকের সামনে থামলে এটি ব্যবহার করা হয়। অথবা ইঞ্জিনে আগুন লাগার মতো বিশেষ পরিস্থিতি দেখা দিলেও সুইচ বন্ধ করা হয়। তবে ওই ফ্লাইটে এমন কোনো জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল কি না, প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হয়নি।
ভারতের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো বলছে, তদন্তের এ পর্যায়ে বোয়িং ৭৮৭-৮ বা জিই জিইএনএক্স-১বি–এর ইঞ্জিন পরিচালনাকারী কিংবা প্রস্তুতকারকদের জন্য কোনো পদক্ষেপের কথা সুপারিশ করা হয়নি।
এ বিষয়ে এয়ার ইন্ডিয়া, বোয়িং এবং জিই অ্যাভিয়েশন কোনো মন্তব্য করেনি।
ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত হয় উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো। এ সংস্থাই এখন এয়ার ইন্ডিয়ার ওই উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছে।