জাতিসংঘের বেশিরভাগ রিপোর্ট কেউ পড়ে না

জানালো জাতিসংঘই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০২ আগস্ট ২০২৫, ২৩:০৬

জাতিসংঘের কর্মপদ্ধতি ও ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে একটি অভ্যন্তরীণ সংস্কারমূলক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্ময়কর এক তথ্য— সংস্থাটির নিজস্ব প্রতিবেদনগুলোর বেশিরভাগই কেউ পড়ে না।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার (১ আগস্ট) বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রকে বিষয়টি জানিয়ে বলেন, প্রতিবছর হাজার হাজার রিপোর্ট তৈরি ও সভা আয়োজনের চাপ জাতিসংঘ ব্যবস্থাকে প্রায় ভেঙে পড়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি জানান, গত বছর জাতিসংঘে ২৭ হাজার সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যাতে অংশ নেয় ২৪০টি সংস্থা ও কমিটি। এ সময়ে ১ হাজার ১০০টি রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
এই বিপুল পরিমাণ সভা ও প্রতিবেদন আমাদের সবাইকে এক প্রকার চূড়ান্ত ক্লান্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে, বলেন গুতেরেস।
‘এসব প্রতিবেদনের বেশিরভাগই খুব একটা পড়া হয় না। মাত্র পাঁচ শতাংশ প্রতিবেদন ৫ হাজার ৫০০ বারের বেশি ডাউনলোড হয়। আবার প্রতি পাঁচটির একটির ডাউনলোড সংখ্যা এক হাজারের নিচে। আর ডাউনলোড মানেই যে কেউ তা পড়ছে, সেটাও নয়।’
২০২৫ সালে জাতিসংঘের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গঠিত ইউএন৮০ টাস্কফোর্স গত মার্চে কাজ শুরু করে। এই টাস্কফোর্স জাতিসংঘের ভেতরে নানা সংস্কার প্রক্রিয়া চালু করেছে, যার একটি অংশ হলো ‘ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের পদ্ধতি পর্যালোচনা’।
প্রতিবেদনে লক্ষ্য করা হয়েছে, সাধারণ পরিষদ বা নিরাপত্তা পরিষদের মতো সংস্থাগুলো থেকে হাজার হাজার ‘ম্যান্ডেট’ আসে, যা বাস্তবায়নের জন্য প্রচুর সভা ও প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়।
তাছাড়া, জাতিসংঘ এ বছরও তীব্র অর্থসংকটে রয়েছে—গত সাত বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। সদস্য ১৯৩টি দেশের অনেকেই নিয়মিত ও সময়মতো চাঁদা দেয় না, যার ফলে বাজেট ঘাটতি হয় এবং কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এ অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রস্তাব হলো— সভা কমাতে হবে এবং প্রতিবেদনের সংখ্যা কমাতে হব, তবে যেগুলো তৈরি হবে, তা যেন সব ম্যান্ডেট পূরণে সক্ষম হয়।

সূত্র: রয়টার্স