দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে কেজরিওয়ালের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
সেই সঙ্গে বলেছেন, লোকসভা ভোটের আগে কেজরিওয়াল ও তার দল আম আদমি পার্টিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যেভাবে লাগাতার গ্রেপ্তার-হয়রানি করা হচ্ছে, তা অগ্রহণযোগ্য এবং এ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অভিযোগ জানাতে যাবে বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইনডিয়া’র প্রতিনিধিদল।
এক্সপোস্টে মমতা লিখেছেন, ‘জনগণ নির্বাচিত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির তীব্র নিন্দা করছি। আমি সুনীতা কেজরিওয়ালের (অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী) সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করেছি এবং পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি। বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকলে ইডি, সিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও ছাড় পাচ্ছেন, দুর্নীতি চালিয়ে যেতে পারছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা গণতন্ত্রের উপর নির্মম আঘাত।’
মমতা আরও লেখেন, ‘আমাদের ‘ইনডিয়া’ জোটের সদস্যরা শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করবেন এবং আদর্শ আচরণবিধি প্রযুক্ত থাকার সময়ে বিরোধী নেতাদের এভাবে ‘টার্গেট’ করার বিরোধিতা করবেন। কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ইনডিয়া’র প্রতিনিধি দলে তৃণমূলের তরফে থাকবেন ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং নাদিমুল হক।’’
উল্লেখ্য, আবগারি ‘দুর্নীতি’ মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে করেছে ভারতের অর্থনিতিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন ডিরেক্টরেট বা ইডি। এর আগে এই মামলায় তিনি পর পর আট বার তলব এড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবারও তাকে হাজিরা দিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা; কিন্তু হাজিরা না দিয়ে কেজরিওয়াল দিল্লি হাই কোর্টে রক্ষাকবচের আবেদন জানান। তা খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেই রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছায় ইডির তদন্ত দল, দুই ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয় বাড়িতে; কেজরি’কে জিজ্ঞাসাবাদও করে ইডি। তারপর রাতেই তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কেজরওয়ালের বাসভবনের সামনে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল গ্রেপ্তার হওয়ার পর পর আম আদমি পার্টির (আপ) পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না তিনি, প্রয়োজনে জেলে বসেই সরকার চালাবেন। উল্লেখ্য, কেজরিওয়ালই দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যাকে পদে থাকাকালীন অবস্থায় গ্রেফতার করা হল।
কিছু দিন আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও জমি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। তবে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা জমা দিয়েছিলেন হেমন্ত। তার জায়গায় নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন চম্পই সোরেন।