রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। তার নাম তৈমুর ইভানভ এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। তিনি গত আট বছর ধরে এই পদে ছিলেন এবং রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামো প্রকল্পের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই তাকে আটক করা হলো। আজ ২৪ এপ্রিল (বুধবার) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার একজন উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ঘুষ নেওয়ার সন্দেহে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষ তদন্তকারী সংস্থা। তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার বলেছে, তৈমুর ইভানভকে আটক করা হচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, ২০১৬ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত হওয়া ৪৭ বছর বয়সী তৈমুর ইভানভ দেশটির সামরিক অবকাঠামো প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন। মূলত অ্যাক্টিভিস্টরা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ায় কথিত ব্যাপক মাত্রার দুর্নীতির সমালোচনা করে আসছেন।
২০২২ সালে ‘রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোতে নির্মাণ কাজের সময় দুর্নীতির পরিকল্পনায়’ অংশগ্রহণের জন্য রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী তৈমুর ইভানভকে অভিযুক্ত করেছিল দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশন (এসিএফ)। এই সংস্থাটি রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এসিএফ বলছে, বিশেষ করে ইউক্রেনীয় বন্দরনগরী মারিউপোলের নির্মাণ প্রকল্প থেকে লাভবান হয়েছেন তৈমুর ইভানভ। এই শহরের বেশিরভাগই ইউক্রেনে আগ্রাসনের সময় কয়েক মাস চলা রাশিয়ান বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
অবশ্য ইভানভের গ্রেপ্তারের কথা ঘোষণা করা হলেও রাশিয়ার এই উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রতিক্রিয়া কীভাবে দিয়েছেন তা জানানো হয়নি।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ার ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২৯০ অনুচ্ছেদের ৬ অংশের অধীনে ইভানভকে আটক করা হয়েছে। এই দণ্ডবিধি তখনই প্রযোজ্য হয় যখন সন্দেহভাজন অভিযুক্তের ঘুষ নেওয়ার পরিমাণ ১০ লাখ রুবল ছাড়িয়ে যায়।
এই ধরনের অপরাধগুলো বড় অংকের জরিমানা এবং ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, তৈমুর ইভানভ পূর্বে মস্কো অঞ্চলের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আর এখানেই বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি শোইগুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন বলে জানা যায়।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী তৈমুর ইভানভকে আটকের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আগেই অবহিত করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ইভানভের ওপর যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি তার সম্পদও জব্দ করেছে। তাকে ‘রাশিয়ান সামরিক নেতৃত্বের সামগ্রিক স্তরক্রমের দশম’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়ে থাকে।