আফগানিস্তানের বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে পাশ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানে পালিয়ে গেছেন অনেক আফগান। তবে এখন আবার দেশে ফিরে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাকিস্তান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো সময় তাদের দেশে ফিরে যেতে হতে পারে।
আফগানিস্তানের কয়েক দশকের যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানকে নিজেদের বাসা বানিয়েছেন, এমন অন্তত ১৭ লাখ আফগান রয়েছেন। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে ধর-পাকর শুরু হবার পর থেকে প্রায় ৬ লাখ আফগান তাদের দেশে ফিরে গিয়েছে অর্থাৎ আরও ১০ লাখের বেশি আফগান পাকিস্তানে আত্মগোপন করে আছে।
জোর করে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠাবে সেই ভয়ে তারা সাধারণ মানুষের দৃষ্টির আড়ালে থাকছেন, চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন এবং তাদের এলাকা ছেড়ে বাইরে বের হচ্ছেন না।
করাচিতে এমন এলাকা আছে যেখানে হাজার হাজার আফগান বাস করছে কিন্তু সেখান কোন স্বাস্থ্য পরিসেবা বা শিক্ষার ব্যবস্থা নেই।
রাস্তাগুলোতে খুব কম নারীদের দেখা যায় তবে যারা বাইরে যান তারা বোরকা পড়ে বের হন। প্রায় আফগানিস্তানের মত নীল রং-এর বোরকা দেখা যায়।
আইনজীবী মনিজা কাকার করাচীতে আফগান সম্প্রদায়ের সাথে ব্যাপকভাবে কাজ করেন। তিনি বলেন, এখানে এমন পরিবার আছে যাদের কয়েক প্রজন্ম ধরে কোনও কাগজপত্র নেই। কাগজ না থাকায় তারা স্কুলে যেতে বা হাসপাতালের মতো প্রাথমিক পরিসেবাগুলিও পায় না।
ধরপাকড় শুরুর আগে থেকেই আফগানদের দিকে নজর রাখা হচ্ছিল এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে পাকিস্তান চায় সব আফগানকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে, এমনকী যাদের আইসি কাগজপত্র আছে তাদেরকেও। তবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
করাচিতে আরেকটি এলাকা যেখানে বেশিরভাগ আফগান লোকজন বাস করেন সেখানে পুলিশ যাওয়ার পরে লোকজন সরু অলিগলিতে লুকিয়ে পরে ।তথ্যদানকারী একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পুলিশ আসার খবরটি ছড়িয়ে পরে।
কাকার পাকিস্তানে থাকা আফগানদের দুর্দশা দেখে হতাশ। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় তাদের কোন খাবার থাকে না। আমরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছি তাদেরকে সাহায্য করার জন্য।‘ তিনি বলেন, আগে শরণার্থীরা এসব এলাকা থেকে বেরিয়ে করাচির শহরতলিতে অর্থ উপার্জন বা চিকিৎসার জন্য যেতেন। কিন্তু তারা এখন ভয় পায় যে বাইরে বের হলে তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারে।