কুমিরের সাথে লড়াই করে বোনকে বাঁচানো তরুণী পেলেন রাজকীয় পদক

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৬ মে ২০২৪, ১১:১৬

এবছরের কুমিরের মুখে ঘুষি মেরে নিজের যমজ বোনকে বাঁচানো ব্রিটিশ তরুণীকে কিংস গ্যালান্ট্রি মেডেলে ভূষিত করা হয়েছে। খবর বিবিসির। যুক্তরাজ্যের স্যান্ডহার্স্টের বাসিন্দা ৩১ বছর বয়সী জর্জিয়া লরি তার বোন মেলিসা লরির সঙ্গে ২০২১ সালের জুনে মেক্সিকোকে ছুটি কাটাতে যান। সেসময় দুই বোন পুয়ের্তো এস্কোনিডোর এক সৈকতে সাঁতার কাটছিলেন। জর্জিয়া হঠাৎ দেখেন মেলিসাকে একটি কুমির টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সে সময় বোনকে ছাড়াতে কুমিরটির মাথায় ঘুষি মারতে শুরু করেন জর্জিয়া।
একপর্যায়ে কুমিরের মুখ থেকে বোনকে ছুটিয়ে নৌকা পর্যন্ত নিয়ে যেতে সক্ষম হন জর্জিয়া। এরপর দুইজনকেই নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। জর্জিয়া হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন। অন্যদিকে গুরুতর আহত মেলিসা কোমায় চলে যান।
জর্জিয়া বলেন, ‘আমি সত্যিই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এটি আমার কাছে ভয়াবহ অগ্নিপরীক্ষায় জয়ী হওয়ার একটি রূপালী স্মারক।’ রাজার প্রথম সিভিলিয়ান গ্যালান্ট্রি লিস্টে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে জানতে পেরে তিনি বলেন, ‘চিঠিটি পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করেছি। এটি পেয়ে আমি খুব অবাক হয়েছিলাম, কারণ আমি এটি আশা করিনি।’
বিবিসি ব্রেকফাস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেলিসা বলেন, ‘সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে যায়।’
তিনি জানান, যখন তাকে কুমিরটি কামড়ে পানির নিচে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, তার মনে হয়েছিল… এই বিপদ থেকে তিনি বেঁচে ফিরতে পারবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন নৌকায় তোলা হয়েছে, তখন আমার মনে হচ্ছিল মনে হচ্ছিল আমায় তখনো কেউ টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি বারবার বলছিলাম, আমাকে জড়িয়ে ধর জর্জিয়া, আমাকে জড়িয়ে ধর, আমি মারা যাচ্ছি।’
জর্জিয়া বলেন, ‘এতদিন পরেই ঘটনাটিকে বাস্তব মনে হয়। আমি যখন এটি নিয়ে চিন্তা করি, হরর সিনেমার মতো লাগে। আমি মেনে নিয়েছি এটি আমাদের জীবনের একটি অংশ।’ তিনি বলেন, ওই ঘটনার ফলে আমরা এখন আরও অনেক কাছাকাছি এসেছি। আমি ভেবেছিলাম আমার বোন মারা গেছে। তাকে হারানোর যে ব্যথা, তা থেকে আমি তার প্রতি আমার ভালোবাসা কতটা তা বুঝতে পেরেছি।
এই বছরের সিভিলিয়ান গ্যালান্ট্রি লিস্টে ৯ জনের নাম রয়েছে। এদের একজন হলেন একজন অফ-ডিউটি পুলিশ অফিসার, যিনি ডাবল খুনের সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করার সময় ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছিলেন৷ এই পদক বিজয়ী আরেকজন চীনের একটি নদী থেকে একজন অপরিচিত মানুষকে উদ্ধার করেছিলেন। সাহসিকতার জন্য এসব মানুষকে কিংস মেডেলে ভূষিত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের উপপ্রধানমন্ত্রী অলিভার ডাউডেন বলেন, ‘আজ যারা বীরত্বসূচক পুরস্কার পাচ্ছেন তাদের গল্প সবার হৃদয়ে নাড়া দিতে বাধ্য। তাদের সাহসিকতা অসম্ভব পরিস্থিতিতেও মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। আমি তাদের কৃতিত্বের প্রশংসা করি এবং এই সম্মান প্রাপ্তির জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই।’