ইরানি প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারে ‘দুর্ঘটনা’, মেলেনি সন্ধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৯ মে ২০২৪, ২৩:৩১

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়েছে। ইরানি বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়েছে, রবিবার (১৯ মে) আজারবাইজান থেকে ইরানে ফেরার পথে তাদের বহনকারী কপ্টারটি স্বাভাবিকভাবে অবতরণ করতে পারেনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর থেকে ইরানি প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
রয়টার্সকে এক অজ্ঞাত ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জীবন ‘ঝুঁকিতে’ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, আমরা এখনও আশাবাদী। কিন্তু দুর্ঘটনাস্থল থেকে যে খবর আসছে তা খুব উদ্বেগজনক।
আইআরএনএ বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আধাসরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স রাইসির সুস্থতার জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রেসিডেন্টের জন্য প্রার্থনা প্রচার করা হচ্ছে।
আইআরএনএ জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটিতে রাইসি, আমির আব্দোল্লাহিয়ান ও স্থানীয় কর্মকর্তারা ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, রাইসির বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। একটি হেলিকপ্টার স্বাভাবিকভাবে অবতরণ করতে পারেনি। কর্তৃপক্ষ আরও বিস্তারিত তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সুনগুন নামের একটি তামার খনিতে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। এলাকাটি ইরানের তাবরিজ শহর থেকে প্রায় ৭০-১০০ কিলোমিটার দূরে। ওই শহরেই যাচ্ছিলেন তারা।
আইআরএনএ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার স্থানটি পাহাড়ি জঙ্গল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ফুটেজে দেখানো হয়েছে, একটি এসইউভি গাড়ি গাছপালার মধ্য দিয়ে ছুটছে। জরুরি সেবার মুখপাত্র বাবাক ইয়েকতাপারাস্ত বলেছেন, ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকারী একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, অনেক উদ্ধারকারী টিম হেলিকপ্টারটি খুঁজছে। প্রতিকূল আবহাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাজ করছেন। আমরা আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ৬৩ বছর বয়সী রাইসি। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি নৈতিকতা আইন জোরদার করেছেন, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে শক্তহাতে দমন করেছেন এবং বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
ইরানের দ্বৈত রাজনৈতিক ব্যবস্থা ধর্মীয় ও সরকারের সমন্বয়ে গঠিত। সব ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নীতিতে প্রেসিডেন্ট নন, সর্বোচ্চ নেতার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অনেকেই রাইসিকে বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করেন। এখন পর্যন্ত রাইসির গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলোতে সমর্থন জানিয়ে আসছেন খামেনি।