ভারতে সরকারিভাবে বদলে গেল নয়া দিল্লির রাজপথের নাম। একই সঙ্গে দেশটির রাজধানী দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের কাছে স্থাপিত হলো নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের ২৮ ফুট লম্বা মূর্তি।
২৮০ মেট্রিক টনের মূর্তিটি অখণ্ড একটি গ্রানাইট শিলা কেটে তৈরি করা হয়েছে। তেলঙ্গানা রাজ্য থেকে আনা হয়েছিল ওই বিশাল পাথর। টানা দুই মাস কাজ করে মূর্তিটি বানিয়েছেন শিল্পীরা।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে ‘রাজপথে’র নাম পরিবর্তন করে 'কর্তব্য পথ' নামকরণ করা হলো।
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত সেন্ট্রাল ভিস্তা এভিনিউ পর্যন্ত। যা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পাশাপাশি ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন মোদি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রাজপথের নাম বদলের কথা বলতে গিয়ে বলেন, রাজপথ আজ ইতিহাস। এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতীয়দের দাসত্বের প্রতীক। আজ সেই দাসত্বের প্রতীক মুছে ফেলা হলো। 'কর্তব্য পথ' এর নামে আজ দেশে এক নতুন ইতিহাস তৈরি হয়ে গেল।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির ভূমিকার প্রসঙ্গ তোলেন মোদি। পাশাপাশি এদিন কংগ্রেসের নাম না নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তীতে নেতাজির প্রতি যথোচিত সম্মান প্রদর্শন করেনি কোনও সরকার। নেতাজির নাম মানুষের মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। নেতাজি ছিলেন অখণ্ড ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। নেতাজিকে চ্যালেঞ্জ করার মতো দেশে এখনও কাউকে দেখা যায়নি। গোটা দুনিয়া নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসকে এক বিশাল মাপের নেতা বলেই মনে করে। তার আদর্শ মেনে চললে আমাদের দেশ আরও উন্নত হতো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার পরই আমরা আমাদের এ মহান নেতাকে ভুলে গেলাম! তার দেখানো পথ, এমনকি তার সঙ্গে সম্পর্কিত চিহ্নকেও উপেক্ষা করা হলো।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়া গেটের যে জায়গায় নেতাজির মূর্তি স্থাপিত হয়েছে সেখানে ব্রিটিশ শাসনকালে প্রতিনিধির মূর্তি ছিল। স্বাধীনতার পর ছিল 'অমর জওয়ান জ্যোতি'।
এ প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ, একই জায়গায় নেতাজির সুবিশাল মূর্তি স্থাপন করা হলো। যা শক্তিশালী ভারতের প্রতীক। আমরা ক্ষমতায় আসার পর গত আট বছর নেতাজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নেতাজি স্বপ্ন দেখেছিলেন, লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই অভিজ্ঞতার অংশীদার। আমি ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে লালকেল্লায় তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলনের সৌভাগ্য অর্জন করেছি।