আসামে চলমান বন্যায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি জানিয়েছে এখন পর্যন্ত রাজ্যের ১৯ট জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে এবং এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৬ লাখ ৪৪ হাজার ১২৮ জন মানুষ।
বন্যাকবলিত জেলাগুলো হলো কামরুপ, গোলাঘাট, মাজুলি, লাখিমপুর, করিমগঞ্জ, কাছাড়, ধেমাজি, মুড়িগাঁও, উদলগুড়ি, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, নাগাঁও, শিবাসাগড়, দারাং, নলবাড়ী, সোনিতপুর, তামুলপুর, বিশ্বনাথ এবং জোড়হাট।
আসাম রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর এএসডিএমএ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্তত আটটির পানি বিপত্সীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় ইতিমধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে, আর এক জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। এএসডিএমএর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই দুই জনকে নিয়ে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বন্যা, ঝড় ও ভূমিধসের জেরে আসামে মোট মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৫ জনে।
বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে গুরুতর লাখিমপুরে। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পানিবন্দি হয়ে পড়েয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ধেমাজি এবং কাছাড়। এ দুই জেলায় পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে যথাক্রমে ১ লাখ ১ হাজার ৩৩৩ জন এবং ৬৬ হাজার ১৯৫ জন মানুষ। রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে বন্যাকবলিত জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এসব শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে ৮ হাজার ১৪২ জন মানুষ। শিগিগরই আরো ৬৪টি শিবির খোলা হবে বলে জানিয়েছে দপ্তর।
বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে উদ্ধারে দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে সেনা বাহিনী, বিমান বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং স্থানীয় প্রশাসন। ধেমাজি জেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করেছে বিমান বাহিনীর হেলিকপটার। আর তিনসুকিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সোমবার ১ হাজার ২৯৩ জনকে উদ্ধার করেছেন আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। যে আটটি নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সেগুলো হলো ব্রহ্মপুত্র, সুবানসিরি, দিখৌ, দিসাং, বুড়িদিহিং, জিয়া-ভারালি, বেকি এবং কুশিয়ারা।
সোমবার এক বিবৃতিতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, পার্শ্ববর্তী অরুণাচল প্রদেশে ব্যাপক বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্টি পাহাড়ি ঢল এই বন্যার জন্য দায়ী। তিনি আরো বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে ইতিমধ্যে টেলিফোনে কথা হয়েছে তার এবং কেন্দ্রীয় সরকার আসামকে যাবতীয় সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে।