রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে আগামী বছরের মধ্যে ইউক্রেনকে কমপক্ষে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের (৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার) সামরিক সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার করেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। এ সময় আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটো জোটে সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিয়েভ ঠিক পথেই রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাটো নেতারা।
বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পৃথক এবং যৌথ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে এ জোটের নেতারা। চূড়ান্ত ঐ ঘোষণাপত্রে জোটের সদস্যরাও ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পৃথক এবং যৌথ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্ক ঘোষণা করেছে, এ গ্রীষ্মের মধ্যে ন্যাটোর দেওয়া প্রথম এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনের সামরিক পাইলটদের হাতে থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্র আরো জানিয়েছে, ২০২৬ সালে জার্মানিতে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে তারা। মিত্ররা বলছে, ইউরোপের জন্য রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলা করার লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। এ পদক্ষেপের ফলে শীতল যুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন অস্ত্র পেতে যাচ্ছে জার্মানি।
চীন ন্যাটোর বিরুদ্ধে অন্যদের ক্ষতি করে নিজের নিরাপত্তা চাওয়ার অভিযোগ এনে এশিয়ায় একই ধরনের বিশৃঙ্খলা না আনতে বলেছে। ন্যাটোকে চীনকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের 'নির্ণায়ক সহায়তাকারী' হিসেবে অভিহিত করার এক দিন পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চীনের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, 'ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের ওপর ন্যাটোর দায় চাপানো অযৌক্তিক এবং এর অশুভ উদ্দেশ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের সুষ্ঠু ও বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান রয়েছে। ওয়াশিংটনে শীর্ষ সম্মেলনে ন্যাটো এক বিবৃতিতে বলে, রাশিয়ার সঙ্গে 'সীমাহীন অংশীদারিত্ব' এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য বৃহদাকারের সমর্থনের মাধ্যমে চীন যুদ্ধের সহায়ক হয়ে উঠেছে। লিন বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বৈধ ও যৌক্তিক এবং বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনে। তিনি বলেন, ন্যাটোর 'তথাকথিত নিরাপত্তা' অন্য দেশের নিরাপত্তার ক্ষতি করে অর্জন করা হয়।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে তাদের নেতা বা প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে লিন চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করতে, চীনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না করা এবং ইউরোপে গোলমাল সৃষ্টি করার পর এশিয়াতে এসে বিশৃঙ্খলা না সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন।