ফিলিস্তিনিদের কোণঠাসা করতে ও দখলকৃত ভূখণ্ডের নিরাপত্তা জোরদারে এমন কোনো উপায় নেই যা প্রয়োগ করছে না ইসরায়েল। এমনকি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদিদের সামরিক বাহিনীতে চাকরির লোভনীয় অফার দিয়ে রেখেছে দেশটি। সংকটকালে দখলদারদের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়তেও দেখা গেছে ইসরায়েলের অনেক দ্বৈত নাগরিককে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফে যোগ দেওয়া তাদের অনেকেই তুরস্কের নাগরিক। তাদের জন্য এবার কঠিন শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে তুর্কি পার্লামেন্ট মজলিশে।
ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষে গাজায় যুদ্ধ করতে যাওয়া তুর্কি নাগরিকদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের এ প্রস্তাব উত্থাপন করেছে কুর্দিশ ইসলামপন্থি দল ফ্রি কজ পার্টি। গেল মঙ্গলবার তুরস্কের পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিলটি উত্থাপন করা হয়। দলের এমপি সেরকান রামানলি জানান, তার দল বিশ্বাস করে যেসব তুর্কি-ইসরায়েলি নাগরিক আইডিএফে যোগ দিয়েছে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছে, তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া এবং তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা উচিত। এ লক্ষ্যেই সংসদে তারা প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন।
কুর্দি বংশোদ্ভূত এ নেতা জানান, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তুরস্ক গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে বাধ্য। তা সত্ত্বেও বিচার মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এ ধরনের প্রস্তাব উত্থাপন করতে কেন ৯ মাস অপেক্ষা করতে হলো, সে প্রশ্নও রাখেন সেরকান রামানলি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তুর্কি সংবাদমাধ্যম টার্কিশ মিনিটের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুজন তুর্কি-ইসরায়েলি নারী গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। তারা হলেন- মিনে গুমুশকায়া এবং ওমায় আকচায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া গুমুশকায়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পোশাকে নিজের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে ওমায় আকচায় জানান তিনি ইসরায়েলে ফেরত গেছেন এবং তাকে রক্ষা করার জন্য তিনি গর্বিত। এখন পর্যন্ত ঠিক কতজন তুর্কি নাগরিক ইসরায়েলের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তার কোনো সঠিক তথ্য নেই।
এর আগে নিজ দেশের নাগরিকদের ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে যোগদানের ব্যাপারে সতর্ক করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ সময় দেশটি দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা এসব সেনাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফেরত আসামাত্র গ্রেপ্তার ও শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার সতর্কবার্তা দেয়।