তেহরানে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইরান এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এর বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
এতে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে হামলা না চালাতে ইরানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।
মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে আন্তর্জাতিক নানা কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে সামরিক হামলার হুমকি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
কিন্তু জবাবে পেজেশকিয়ান রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, পাল্টা জবাব দেওয়াটাই অপরাধ বন্ধ করার পথ এবং এই জবাব দেওয়া ইরানের ‘আইনগত অধিকার’।
ইসরায়েল হামাস নেতা হানিয়াকে হত্যার দায় স্বীকার করেনি। তবে ইরানের হামলার হুমকির মুখে তারা তাদের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছে।
ওদিকে, লেবাননে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কমান্ডার নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই গোষ্ঠীটিও ইসরায়েলে হামলা করে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
বিবিসি জানায়, এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায়, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে ইরান ও এর মিত্রদেরকে ইসরায়েলে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। এমন হামলা আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে সতর্ক করে তারা।
পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ইরানের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে ইসরায়েলে তাদের হামলার হুমকি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ২০২১ সালের মার্চের পর ইরানকে যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি এমন ফোনকল এটিই ছিল প্রথম।
ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, স্টারমার ফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে বলেন, “ভুল হিসাব নিকাশের মারাত্মক ঝুঁকি আছে। এখন সময়টি শান্ত থাকার এবং সতর্কভাবে পরিস্থিতি বিবেচনা করার।”
ইসরায়েলে হামলা চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য ইরানকে আহ্বান জানিয়ে স্টারমার বলেন, “যুদ্ধে কারও স্বার্থ রক্ষা হবে না।”
এরপর মঙ্গলবার সকালে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরানা জানায়, পেজেশকিয়ান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে বলেছেন, ইসরায়েলকে দেওয়া পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনের কারণেই দেশটি নৃশংসতা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত হয়েছে এবং শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
যুদ্ধে কোনও দেশেরই স্বার্থ রক্ষা হয়না- সেকথা স্বীকার করে নিলেও পেজেশকিয়ান বলেন, একজন আগ্রাসীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক জবাব দেওয়াটা সব দেশের আইন অধিকার এবং এভাবেই আগ্রাসন ও অপরাধ বন্ধ করা যেতে পারে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পরে আলাদাভাবে লন্ডন, প্যারিস এবং বার্লিনের সংযত থাকার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে।