ভারত-চীন সীমান্তের সমস্যাগুলোর ৭৫ শতাংশের সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তবে সীমান্তে দুই বাহিনী সাজো সাজো অবস্থান একটি 'বড় সমস্যা' বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জেনেভায় গ্লোবাল সেন্টার ফর সিকিউরিটি পলিসিতে বক্তব্য রাখার সময় এ কথা জানান জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি আরও জানান, পূর্ব লাদাখ সমস্যা সমাধানে ভারত-চীন আলোচনা চলছে।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘এখন সেই আলোচনা চলছে। আমরা কিছুটা অগ্রগতি করেছি। আপনি বলতে পারেন প্রায় ৭৫ শতাংশ ডিসএনগেজমেন্ট (সেনা প্রত্যাহার) সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।’
এই প্রথম চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতিকে এভাবে শতাংশে সংজ্ঞায়িত করল ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমাদের এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। আমরা দুই দেশই সেনাদের সীমান্তের কাছাকাছি নিয়ে এসেছি, সীমান্তের সামরিকীকরণ করেছি। এটা আরেকটি বড় সমস্যা।'
চার বছর আগে ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষেই সেনাদের মৃত্যু হয়। আহতও হন অনেকে। সেই থেকে এলএসির স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চীনকে ভারত ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছে। কিন্তু আজও তা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি।
এদিকে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ব্রিকস নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বৈঠকের সাইডলাইনে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) রাজনৈতিক শাখার সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই'র সঙ্গে দেখা করেন।
বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, 'উভয় পক্ষ হিমালয় সীমান্তের অবশিষ্ট এলাকাগুলোতে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে এবং তাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে সম্মত হয়েছে।'
বিবৃতিতে আশাবাদ প্রকাশ করা হয়, দোভাল-ওয়াং বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল ও পুনর্নির্মাণের সুযোগ করে দিবে। দোভাল বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার জন্য সীমান্ত অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অমীমাংসিত সীমান্তের প্রতি সম্মান থাকাটা জরুরী। এবং দুই পক্ষকেই প্রাসঙ্গিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, প্রোটোকল এবং দুই সরকারের মধ্যে অতীতে হওয়া বোঝাপড়াগুলো পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'ভারত-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যে শুধু এই দুই দেশের জন্যই না, এই অঞ্চল ও সামগ্রিকভাবে গোটা বিশ্বের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ, এ ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই পক্ষ।'