মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ বুধবার ৪০০ জনেরও বেশি শিশুকে উদ্ধার করেছে। এই শিশুদের যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণার কথা জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা। খবর ডয়চে ভেলের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে নিষিদ্ধ একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত একটি ইসলামি ব্যবসায়িক সংস্থা এই চ্যারিটি হোম পরিচালনা করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক রাজারুদিন হোসেন জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার দুটি রাজ্যে ২০টি চত্বরে সমন্বিত অভিযানের সময় পুলিশ ধর্মীয় শিক্ষকসহ ১১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ২০১ জন ছেলে এবং ২০১ জন মেয়ে রয়েছে, যাদের বয়স এক থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।
রাজারুদিন এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, অবহেলা, দুর্ব্যবহার, যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রতিবেদন দাখিল হওয়ার পর এই অভিযান চালানো হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো কে লিখেছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান।
এই সেন্টারগুলোর সবই গ্লোবাল ইখওয়ান সার্ভিসেস অ্যান্ড বিজনেস (জিআইএসবি) দ্বারা পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে জিআইএসবি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সংগঠনটির দাবি, এই চ্যারিটি হোমগুলি তারা পরিচালনা করে না। সংগঠনটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসলাম এবং রাষ্ট্রীয় আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা এবং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা আমাদের নীতির মধ্যে নেই। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে ঘটনার তদন্তের দাবি জানানোর কথাও জানিয়েছে জিআইএসবি।
সুপারমার্কেট থেকে লন্ড্রোম্যাট পর্যন্ত নানা ব্যবসায় জড়িত জিআইএসবি। সংগঠনটির ওয়েবসাইট অনুসারে ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মিশর, সৌদি আরব, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ড সহ আরো নানা দেশে কাজ করে।
রাজারুদিন জানিয়েছেন, প্রাথমিক পুলিশ তদন্তে জানা গেছে যে উদ্ধারকৃত শিশুরা মালয়েশিয়ার জিআইএসবি কর্মচারীদের সন্তান। জন্মের পরপরই তাদের এসব চ্যারিটি হোমে পাঠানো হয়েছিল।
ভুক্তভোগী এই শিশুদের প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবকেরা যৌন নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে এইসব শিশুদের অন্য শিশুদের যৌন নির্যাতন করতে শেখানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মালয়েশিয়া-ভিত্তিক আল-আরকাম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে জিআইএসবি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৪ সালে দেশটির সরকার আল-আরকামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এই সংশ্লিষ্টতার ঘটনা জিআইএসবিও স্বীকার করেছে। তবে এখন প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের মুসলিম অনুশীলনের ওপর ভিত্তি করে একটি ইসলামি গোষ্ঠী হিসেবে বর্ণনা করে।
এর আগে বিতর্কিত 'অনুগত স্ত্রীদের ক্লাব' প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠনটি সংবাদের শিরোনাম হয়েছিল। এই দলে যুক্ত নারীদের স্বামীদের কাছে নিজেদের "যৌনকর্মীর মতো" আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছিল।