বেলারুশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির মাকেই মারা গেছেন। জানা গেছে, দুই দিন পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা ছিল। স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ নভেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেলতার বরাত দিয়ে তার মৃত্যুর খবর জানায় রয়টার্স।
বেলতা সংবাদ সংস্থা জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিমির মাকেই হঠাৎই মারা গেছেন। তবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। ২০১২ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মাকেই।
জানা গেছে, ৬৪ বছর বয়সী মাকেই, এই সপ্তাহের শুরুতে ইয়েরেভানে যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থার (সিএসটিও)-এর একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সোভিয়েত পরবর্তী বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রের একটি সামরিক জোট এটি। সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তার।
২০২০ সালে বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও সরকার বিরোধী বিক্ষোভের আগে, মাকেই পশ্চিমের সঙ্গে বেলারুশের সম্পর্ক উন্নত করার প্রচেষ্টার অন্যতম সূচনাকারী ছিলেন এবং রাশিয়ার সমালোচনাও করেছিলেন। তবে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর তিনি হঠাৎ করেই তার অবস্থান পরিবর্তন করেন এবং বলেন তারা পশ্চিমা এজেন্টদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বিক্ষোভ করছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর, মস্কো ও মিনস্কের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সমর্থক ছিলেন মাকেই। পশ্চিমারা যুদ্ধে উসকানি দিয়েছে এবং ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের উচিত রাশিয়ার শান্তির শর্তে সম্মত হওয়া বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুদ্ধ শুরুর কয়েকদিন আগে, মাকেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বেলারুশের ভূখণ্ড থেকে ইউক্রেনের ওপর কোন আক্রমণ হবে না। কয়েকদিন পর, রাশিয়ান সৈন্যরা
সেটি প্রমাণ করেন, তিনি ভুল ছিলেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করে বলেছেন, ‘বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান ভ্লাদিমির মাকেইর মৃত্যুর খবরে আমরা হতবাক।’ আনুষ্ঠানিকভাবে শিগগির শোকবার্তা ঘোষণা করা হবে।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো, যিনি ২০২০ সালে বিক্ষোভ সত্ত্বেও ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন। তিনি ভ্লাদিমি মাকেইর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
নির্বাসিত বিরোধী নেতা সভিয়াতলানা সিখানৌস্কায়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে মন্তব্য করেন, মাকেই বেলারুশিয়ান জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে মাকেই বেলারুশিয়ান জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন এবং অত্যাচার-নির্যাতনকে সমর্থন করেছিলেন। এভাবেই বেলারুশের জনগণ তাকে মনে রাখবে।