চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের তথাকথিত ‘স্বর্ণযুগ’ শেষ হয়েছে বলে সাফ জানিয়ে দিলেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ঋষি সুনাক তার প্রথম পররাষ্ট্রনীতির বক্তৃতায় আরও বলেন, আগের দশকের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিল ‘নিষ্পাপ’।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যকে এখন প্রতিযোগীদের প্রতি ‘কঠিন বাস্তবতার’ সঙ্গে ইচ্ছাপূরণের চিন্তাভাবনা প্রতিস্থাপন করতে হবে। তবে তিনি ‘স্নায়ু যুদ্ধের’ বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেছেন, চীনের বৈশ্বিক তাৎপর্যকে উপেক্ষা করা যাবে না।
ঋষি সুনাক গত মাসে টোরি নেতা ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চীনের প্রতি যুক্তরাজ্যের অবস্থান কঠোর করার জন্য টোরি ব্যাকবেঞ্চারদের চাপের মুখে পড়েন।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লন্ডনের বাণিজ্যিক এলাকার গিল্ডহলে বার্ষিক লর্ড মেয়রর্স ব্যাঙ্কোয়েট অনুষ্ঠানে ঋষি সুনাকের এ বক্তব্য এলো যখন জিরো কোভিড নীতির বিরুদ্ধে সপ্তাহজুড়ে চীনে বিক্ষোভ চলছে। রোববার সাংহাইয়ে বেশ কয়েকজনকে আটকের খবরও পাওয়া গেছে। সংবাদ সংগ্রহের সময় বিবিসির এক সাংবাদিককেও আটক করা হয়। পরে যদিও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ব্যবসায়ী নেতা ও পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞদের বলেন, প্রতিবাদের মুখে, চীন ‘বিবিসি সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করাসহ আরও দমন করার পথ বেছে নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি চীন আমাদের মূল্যবোধ ও স্বার্থের জন্য একটি পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ‘স্বর্ণযুগ’ শেষ হয়ে গেছে। এই স্বর্ণযুগ বলতে আসলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের অধীনে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ককে বোঝানো হয়। যদিও লন্ডন ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক পরবর্তীতে আর তেমনভাবে এগোয়নি।
সুনাক এটাও জোর দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে চীনের তাৎপর্যকেও উপেক্ষা করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানসহ মিত্রদের সঙ্গে কাজ করবে তার দেশ।
ঋষি সুনাক ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ মাসের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ায় জি-২০ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনার পর তা বাতিল করা হয়।
সূত্র: বিবিসি