নেপালে গত সপ্তাহান্তে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২৪ জন। তাদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন উদ্ধারকর্মীরা।
নেপালের এই দুর্যোগে আহত হয়েছেন আরও ১৫৮ জন। দেশের প্রধান সচিব এক নারায়ণ আর্যাল জানিয়েছেন, ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগটি নেপালের বৃহত্তম উৎসব দশাইনের ঠিক আগে সংঘটিত হয়, যখন সাধারণ মানুষ উৎসব উদযাপনের জন্য পরিবারের কাছে ফিরছিলেন। এর ফলেতে রাস্তায় যানবাহনের চাপও বেশি ছিল, যা উদ্ধার কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি করেছে। রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং উৎসবের যাত্রায় বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ভূমিধস ও বন্যায় অন্তত ১৬টি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে নেপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। এছাড়া নির্মাণাধীন আরও ১৮টি প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা ওলির সরকার দুর্যোগ পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় ধীরগতির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশেষ করে রাজধানী কাঠমান্ডুর ১৬ কিলোমিটার দূরে বেশ কয়েকটি যানবাহন ভূমিধসে আটকা পড়ার পর উদ্ধার অভিযানে বিলম্ব হওয়ায় প্রায় তিন ডজন মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওলি বলেন, আমরা দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু সেটি এমন মাত্রায় হবে তা ধারণা করতে পারিনি।
আবহাওয়া উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকর্মীরা পাহাড়ি অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত ৩৭টি ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের মধ্যে মাত্র নয়টি ফের সচল করা গেছে। সড়ক পরিষ্কারের জন্য ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এতে সহযোগিতা করছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
দক্ষিণ এশীয় দেশটির বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নেপালে এবারের বন্যা ও ভূমিধসের মূল কারণ হিসেবে মৌসুমি বর্ষার শেষ পর্যায়ের অতিবৃষ্টিকে দায়ী করা হচ্ছে, যা সাধারণত জুন মাসে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়।