মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার (২১ অক্টোবর) মধ্যপ্রাচ্যে সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি গাজা যুদ্ধের অবসান এবং যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনাওয়ারের হত্যাকাণ্ডের পর আবারও যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে জোর দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আচমকা হামলা চালায় হামাস। এর পর থেকেই গাজায় বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই সংঘাত থামিয়ে অঞ্চলটিতে নতুন শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
ব্লিঙ্কেনের সফর শুরু হবে ইসরায়েল থেকে। সেখানে তিনি আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনার বিষয়বস্তু হবে গাজা যুদ্ধের অবসান এবং ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্য ও ওষুধসহ জরুরি সহায়তা নিশ্চিত করা। গাজার পুনর্গঠন এবং দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পথও খোঁজা হবে এই বৈঠকগুলোর মাধ্যমে। তবে বিঙ্কেন আর কোন দেশে যাবেন, তা নিশ্চিত করা হয়নি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসসহ পশ্চিমা নেতারা চান দ্রুত এই সংঘাতের অবসান হোক।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহু হয়তো বাইডেন প্রশাসনের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। কারণ তার সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যা ভবিষ্যতের কূটনৈতিক অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে।
গাজায় বর্তমানে মারাত্মক মানবিক সংকট চলছে। খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির অভাবে মানুষ বিপর্যস্ত। কয়েকটি হাসপাতাল এখনো আংশিকভাবে কাজ করছে, তবে সেগুলোয় রোগীর সংখ্যা সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
গত ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং অনেককে জিম্মি করা হয়। এরপর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৪২ হাজার ৫০০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেক মরদেহ চাপা পড়ে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ বার মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার এবারের সফরও কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এই সফর যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে এবং সংঘাত-পরবর্তী সময়ে গাজার পুনর্গঠনের কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে সহায়ক হবে।