
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়েছেন, এটি নারীর বা পুরুষের প্রজনন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে কি না। ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন এবং বন্ধ্যাত্বের মধ্যে কোনো সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে কিছু গবেষক মনে করেন দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বোঝার জন্য আরও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
নারীর প্রজনন ক্ষমতা মূলত গর্ভধারণের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে, আর পুরুষের ক্ষেত্রে এটি সুস্থ ও সক্রিয় শুক্রাণুর উপর নির্ভর করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এখন পর্যন্ত পাঁচটি ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে—COMIRNATY (ফাইজার-বায়োএনটেক), Pfizer, Moderna, SPIKEVAX, এবং NUVAXOVID।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নারীর প্রজনন ক্ষমতায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে কি না, তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে। তবে বৈজ্ঞানিক প্রমাণগুলো এখন পর্যন্ত এসব দাবিকে সমর্থন করেনি। সংস্থাগুলো বলেছে, সংক্ষিপ্ত সময়ের প্রাণী পরীক্ষার ভিত্তিতে মানবদেহে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের বিভিন্ন গবেষণাতেও দেখা গেছে, ভ্যাকসিন নারীর ফার্টিলিটিতে প্রভাব ফেলেনি। তবুও কিছু গবেষক এম্ব্রিও টক্সিসিটি, জেনোটক্সিসিটি ও হরমোনের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা তিনটি প্রধান বিষয়—শুক্রাণুর সংখ্যা, গতিশীলতা ও গুণমানের ওপর নির্ভর করে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতায় সাময়িক প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু ভ্যাকসিন নয়। সংক্রমণের পর প্রায় ৬০ দিন পর্যন্ত শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণমান কমতে পারে, তবে এটি সাধারণত অস্থায়ী।
প্রজনন চিকিৎসা বা এআরটি পদ্ধতিতেও ভ্যাকসিনের নেতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিম্বাশয় উদ্দীপনার আগে ভ্যাকসিন নেওয়া হলে আইভিএফ ফ্রোজেন এম্ব্রিও ট্রান্সফারের সফলতার হার সামান্য কমতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি কমে যেতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, ভ্যাকসিন বা প্রজনন ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ থাকলে ডাক্তারকে দেখানো উচিত। এছাড়া ১২ মাস ধরে সন্তান ধারণে সফল না হলে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।