বেনাপোল দিয়ে তিন দিনে দেশে ফিরলেন ১৫ হাজার পর্যটক

বেনাপোল সংবাদদাতা
  ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৪

ঈদের ছুটি শেষে ভারত থেকে ফিরছেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। এতে বন্দরে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে তারা ভারতে গিয়েছিলেন। ১৬ এপ্রিল থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪২২ পর্যটক দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে ১৬ এপ্রিল চার হাজার ৯১০, ১৭ এপ্রিল পাঁচ হাজার ৩৬৩ এবং ১৮ এপ্রিল পাঁচ হাজার ১৪৯ পর্যটক দেশে ফিরেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত  ছুটি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। টানা পাঁচ দিন বন্ধ ছিল দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে করে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছিল। লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকে গিয়েছিলেন ভারতে। আবার অনেকে ভারত থেকে ফিরে আসছেন। ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেনাপোল বন্দরে যাত্রীদের চাপ বেড়ে গেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় বন্দরে কাজ করছেন বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরের নিরাপত্তাকর্মীরা।
ভারত থেকে ফিরে আসা সুভাষ মাস্টার জানান, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন। পেট্রোপোলে লম্বা লাইনে যে ভিড়, তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে অফিসার কম থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে বেড়ানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে ভারত গিয়েছিলাম জানিয়ে মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘ছুটি শেষ হওয়ায় দেশে ফিরতে হয়েছে বৃহস্পতিবার। আসার সময় বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে দুর্ভোগে পড়েছি। সেখানে ডেস্কের পরিমাণ বেশি থাকলে ও অফিসার বসেছেন মাত্র তিন জন। কাজও করেছেন ধীরগতিতে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে যাত্রীদের।’
ভারতফেরত অধিকাংশ পর্যটক অভিযোগ করে বলেন, দেশে আসার পর দূরপাল্লার বাসে সিট-সংকটের কথা বলে ভাড়া বেশি আদায় করছে পরিবহন কাউন্টারগুলো। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহনভেদে জনপ্রতি নন-এসি ৫৫০-৭৫০ টাকা ও এসি ১০০০-১২০০ টাকা হলেও এখন চাইছে নন-এসি ৮০০ টাকা ও এসি ১৫০০-২০০০ টাকা। ফেরার পথে পকেটে টাকা কম থাকায় কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে তাদের।
যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করেন বলে জানালেন বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন। তিনি বলেন, ‘ভ্রমণকর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ১৪০ কোটি টাকা আয় হয়। সে হিসেবে সেবার মান একেবারে বাড়েনি। আগের মতোই আছে।’
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে গেছেন। ছুটি শেষ হওয়ায় বন্দরে ভারতফেরত পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম তারা যাতে দ্রুত সারতে পারেন, সেজন্য বন্দরের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ‌‘মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪২২ জন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী পর্যটক দেশে ফিরেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় ভারতে ঘুরতে ও চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন তারা। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম শেষ করতে ডেস্ক অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’