শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শাটডাউন কর্মসূচি

মাদারীপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ, শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকে বোমা, ইস্কাটনে ককটেল বিস্ফোরণ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৯
আপডেট  : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:০২

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করেছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শাটডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়নের দাবিতে রবিবার (১৬ নভেম্বর) ভোর থেকে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশসহ বিভিন্ন স্থানে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
অবরোধকারীরা সড়কে গাছ ফেলার পাশাপাশি টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এতে মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দূরপাল্লার যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
এদিকে, সড়ক থেকে গাছ অপসারণ এবং নাশকতা মোকাবিলায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ইতোমধ্যে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন।
মাদারীপুরের মোস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে একদল দুর্বৃত্ত। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা সড়ক থেকে সটকে পড়ে। বন্ধ হয়ে হওয়া সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।’
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ এহতেশামুল ইসলাম জানান, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ডাসার ও কালকিনি থানার অংশে সাত-আটটি স্থানে সড়কের পাশের গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
তিনি আরও জানান, সড়ক থেকে গাছ অপসারণের কাজ চলছে। ডাসার অংশে গাছ সরানো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কালকিনির অংশে বড় গাছ পড়ে থাকায় কিছুটা সময় লাগছে। দ্রুতই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।

ইস্কাটনে ককটেল বিস্ফোরণে পথচারী আহত
রাজধানীর মগবাজার এলাকায় নিউ ইস্কাটন রোডে ককটেল বিস্ফোরণে আবদুল বাসির (৫০) এক পথচারী আহত হয়েছেন।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে ওয়াক্ফ ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আবদুল বাসিরের পায়ে ও হাতে জখম হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আবদুল বাসির জানান, প্রতিদিনের সকালে হেঁটে অফিসে যাচ্ছিলেন। ওয়াক্ফ ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরিত হয়। তার ধারণা, ফ্লাইওভারের ওপর থেকে ককটেলটি ছুড়ে মারা হয়েছে।
হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার এসআই সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গেছে। অপরাধীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।”

শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যালয়ে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ
গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের মাওনা-শ্রীপুর শাখা কার্যালয়ে দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা ও মাওনা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার বারতোপা গ্রামের ওই ব্যাংকের শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
রবিবার দুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের শ্রীপুরের এরিয়া ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক জানান, ব্যাংকের কমকর্তা-কর্মচারীরা প্রায়ই ব্যাংকেই রাতযাপন করেন। এদিনও শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বারতোপা বাজারের গ্রামীণ ব্যাংকের মাওনা-শ্রীপুর শাখায় দৈনন্দিন নিয়মিত কাজ শেষে তিনি ব্যাংকের ভেতরেই ঘুমিয়ে পড়েন। সে সময় তার সঙ্গে আরও চার জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন। মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে এবং বাইরে দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করলে বিস্ফোরিত হয়ে বিকট শব্দ হয়।
‘ওই শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তারা প্রধান ফটকে আগুন দেখতে পান। ব্যাংকের সীামানা প্রাচীরের ভেতরে ও বাইরে কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় বড় ধরেনের দুর্ঘটনা না ঘটলেও ব্যাংকের সাইনবোর্ডটির কিছু অংশ পুড়ে গেছে।’
শ্রীপুর  থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের বারাতোপা ব্রাঞ্চের গেটের বাইরে কে বা কারা পটকা ফুটিয়ে থাকতে পারে। তাদের পক্ষ থেকে এখনও অভিযোগ দায়ের করেনি। আমিসহ মাওনা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি জানান, পুলিশের টহল জোরদার থাকায় দুর্বৃত্তরা বড় ধরনের কোনও নাশকতা ঘটাতে পারেনি। ঘটনাস্থল থেকে একটি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। কারা হামলা চালিয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু করে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।