
যুক্তরাষ্ট্রে দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রথা বাতিল করতে উদ্যোগ নিয়েছেন ওহাইওর রিপাবলিকান সিনেটর বার্নি মোরেনো। তাঁর প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, যেকোনো আমেরিকান নাগরিক যিনি অন্য দেশের নাগরিকত্বও রাখেন, তাদেরকে দুটি দেশের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে কেউ অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিতে চাইলে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে।
মোরেনো, যিনি কলম্বিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিন্তু পরে কলম্বিয়ার নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন, এক বিবৃতিতে বলেন, “আমার জীবনের অন্যতম বড় সম্মান ছিল ১৮ বছর বয়সে আমেরিকান নাগরিক হওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শপথ নেওয়া আমার জন্য বিশেষ গৌরবের বিষয়। আমেরিকান নাগরিক হওয়া মানে সম্মান এবং দায়িত্ব—এটি সম্পূর্ণ বা শূন্য, মধ্যপন্থা নেই।”
তাঁর প্রস্তাবিত আইন, Exclusive Citizenship Act of 2025, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার দাবিতে আনা হয়েছে। আইনটি বলছে, দ্বৈত নাগরিকত্ব “স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও বিভক্ত আনুগত্য” তৈরি করে, যা দেশীয় নিরাপত্তার জন্য হানিকর হতে পারে। নতুন আইন কার্যকর হলে বর্তমান দ্বৈত নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র অথবা অন্য দেশের নাগরিকত্ব বেছে নিতে হবে।
আইন অনুযায়ী, বিদেশে নাগরিকত্ব থাকা বা নেওয়ার বিষয়গুলো নজরদারি ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের। আইন কার্যকর হওয়ার এক বছর মধ্যে দ্বৈত নাগরিকরা বিদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগের জন্য পররাষ্ট্রসচিবকে জানাতে হবে, অথবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগের ইচ্ছা DHS-কে অবহিত করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব শেষ হয়ে যাবে।
যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করবেন—সক্রিয়ভাবে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে—তাদের তথ্য DHS এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হবে এবং তারা অভিবাসন আইনের দৃষ্টিতে বিদেশি হিসেবে গণ্য হবেন।
আগে থেকেই দেশটির দ্বৈত নাগরিকত্ব নীতি বাতিলের চেষ্টা করা হয়েছে, সর্বশেষ হাউসে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা দ্বৈত নাগরিকদের প্রার্থী হওয়ার সময় স্বচ্ছতা আনতে বা এমন প্রার্থীদের কংগ্রেসে আসা প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মভিত্তিক নাগরিকত্ব সীমিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা আদালতে আটকে আছে। তবে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশাসনের কোনো নির্দিষ্ট অবস্থান নেই। মোরেনোর প্রস্তাব আইন হয়ে গেলেও তা আদালতের বাধার সম্মুখীন হতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যেই ১৯৫০-এর দশকে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে রায় দিয়েছে এবং তা বহাল আছে।