বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন এক সদস্য বলেছিলেন, চারদিনে কলকাতা দখল নিতে পারেন তারা। আবার বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী সম্প্রতি বলেছেন, বাংলা বিহার উড়িষ্যা ফেরত দেওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিধানসভায় দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, ওরা বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা দখল করবে, আর আমরা মুখে ললিপপ নিয়ে বসে থাকবো! এটি ভাবার কোনো কারণ নেই যে আমরা মুখে আঙুল দিয়ে বসে থাকবো।
এদিন দুপুরে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি আরও বলেন, আপনারা বলছেন যে দখল করে নেবেন। সেই ক্ষমতা নেই আপনাদের। আর দখল করতে এলেও আমরা বসে বসে ললিপপ খাবো নাকি? সেটা মোটেও ভাববেন না। ভারতবর্ষ অখণ্ড। সবার সঙ্গে অখণ্ড আমরা।
খানিক পরেই তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের কোনো যোগ নেই। আমরা চাই হিংসা নয়, শান্তি ফিরুক। আমাদের রাজ্য সরকারের নীতি হলো কেন্দ্রীয় সরকার যে পথে এগোবে, তাকে সমর্থন জানানো। সচিব গেছেন, আমরা আশাবাদী যে এই বৈঠক থেকে সমাধান সূত্র ওঠে আসবে। আমি প্রত্যেকের কাছে আবেদন করবো, এমন কিছু করবেন না যাতে হিংসা বাড়ে। সবাই সংযত আচরণ করুন, এটিই আমাদের অনুরোধ।
তার ভাষ্য, গোটা বিষয় কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে ও তারাই ব্যবস্থা নেবে। আমরা কোনো পক্ষে নেই, আবার আমরা সব পক্ষেই। আজ পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে যাচ্ছেন। দেখা যাক, কী হয়। আমাদের নীতি হলো আমরা পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলবো।
এদিন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় বিধায়কদের মন্তব্য করা থেকে সতর্ক করে দেন মমতা। বলেন, কোনো অতিরিক্ত মন্তব্য করবেন না, যাতে কোনো প্ররোচনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। একই বার্তা রাজ্যবাসীকেও। সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে মমতা যোগ করেন, দাঙ্গা হিন্দু করে না, দাঙ্গা মুসলমান করে না- দাঙ্গা করে কিছু সমাজবিরোধী মানুষ।
এদিকে, ফেক ভিডিওর অভিযোগ তুলে মমতা দাবি করেন, বাংলাদেশ ইস্যুতে একাধিক ভুয়া ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। ফেক ভিডিও বাজারে চলছে। এগুলো ছড়িয়ে প্ররোচনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে আমরা যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছি, আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, ফিরহাদ হাকিম পথে নামলে রাজ্য সরকার অনুমতি দেয়। আর হিন্দুরা জাতীয় পতাকা নিয়ে কলকাতার বুকে প্রতিবাদ করতে গেলে হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিতে হয়। অর্থাৎ তার (মমতা) একই অঙ্গে বহু রূপ রয়েছে। তার কথার কোনো মূল্য আছে বলে আমি মনে করি না।