নেত্রকোনার দুর্গাপুরে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তার মৃত্যু হয়। এর আগে সন্ধ্যায় পৌরশহরের উকিলপাড়ার পানমহল সংলগ্ন একটি গলি সড়কে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
অপরদিকে, শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া একটার দিকে থানা ভবনের একটি কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান সহকর্মীরা। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নেত্রকোনায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তা (এসআই) পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের নোয়াগাঁও এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র।
তিনি জামালপুরে বেতারে কর্মরত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।
এদিকে, ঘটনাস্থলের একটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখা যায়,৬টা ২১ মিনিটে পান মহল সংলগ্ন সড়কে আগে থেকেই অবস্থান নিয়ে রাখা কয়েকজন দূর্বৃত্ত আচমকা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শফিকুল ইসলামকে ঘেরাও করে হাতে এবং পায়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় তিনি একাধিক বার পালানোর চেষ্টা করলেও হামলাকারীরা তাকে ঘিরে ধরে।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
রাত ৯ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছোট ছেলে রাফিউল ইসলাম জানান,গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ছুটিতে দুর্গাপুর এসেছিলেন শফিকুল ইসলাম। আগামীকাল শুক্রবার সকালে তাদের নিয়ে ময়মনসিংহে একটি ভাড়া বাড়িতে উঠার কথা ছিল। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বাজারে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তরা তার উপর হামলা করে।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ওসি মো. বাচ্চু মিয়া জানান, শফিকুল ইসলাম জামালপুরে বেতারে এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। গত ৮ জানুয়ারি ছুটিতে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। তবে আজ সন্ধ্যার পর কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত ৯ টার পর সেখানে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত হামলার কারণ জানা যায়নি।
তবে আলামত হিসেবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিডিও দেখে হামলাকারীদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের একাধিক টিম অভিযান করছে । এই ঘটনায় একটি মামলাও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জাজিরা থানার ওসির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া একটার দিকে থানা ভবনের একটি কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান সহকর্মীরা। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নজরুল ইসলাম বলেন, আল–আমিন আত্মহত্যা করেছেন।
ওসি আল–আমিনের বাড়ি বরিশালের মুলাদী এলাকায়। তিনি গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাজিরা থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন।
জাজিরা থানা সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা সদরে থানা ক্যাম্পাস অবস্থিত। সেখানে চারতলা একটি ভবনে থানার কার্যক্রম চলছে। ওই ভবনের একটি কক্ষে থাকতেন ওসি আল–আমিন। আজ বেলা সোয়া একটার দিকে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা দেখতে পান, ওসি আল–আমিনের দেহ তাঁর থাকার কক্ষের একটি জানালার সঙ্গে ঝুলছে। পরে থানায় কর্মরত অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি শরীয়তপুরের এসপিকে জানান। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন ও এসপি নজরুল ইসলাম জাজিরা থানায় যান।
শরীয়তপুর পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক মনিরুল ইসলাম বলেন, ওসি আল–আমিনের গলায় গামছা প্যাঁচানো ছিল। তাঁর শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শরীয়তপুরের এসপি বেলা তিনটার দিকে বলেন, ঢাকা থেকে ফরেনসিক টিম আসার পরে আল–আমিনের দেহ নামানো হবে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে পাঠানো হবে। তাঁর পরিবারকে খবরটি জানানো হয়েছে।