বরিশালে গতকাল বুধবার রাত থেকে বুলডোজার দিয়ে সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদিক আবদুল্লাহ এবং প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বাড়ি ভাঙা শুরু হয়েছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও ভোলা-১ (সদর) আসনের সাবেক এমপি তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কালীবাড়ি রোডে সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনের সামনে ভিড় জমান। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা একটি বুলডোজার নিয়ে এলেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে তাঁরা বুলডোজার ব্যবহার করতে পারেননি। এর আধা ঘণ্টা পর বুলডোজার দিয়ে সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবন ভাঙা শুরু হয়। রাত দেড়টার দিকে বাসভবন ঘিরে ভাঙচুরের একপর্যায়ে বুলডোজার দিয়ে বাড়ির নিচতলার একাংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙা চলছিল।
ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্তানা ভেঙে দিচ্ছে।
সাদিক আবদুল্লাহর বাবা সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই।
গতকাল রাত দুইটার দিকে বরিশাল নগরের বগুড়া রোডে আমির হোসেন আমুর বাসভবন বুলডোজার চালিয়ে ভাঙা শুরু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা সকাল পর্যন্ত তিনতলা বাড়ির একতলার নিচের অংশ ভেঙেছেন।
ভোলায় তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর-আগুন
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও ভোলা-১ (সদর) আসনের সাবেক এমপি তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ভোলা শহরের গাজীপুর রোডের ‘প্রিয় কুটির’ নামের বাসভবনে এ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত পৌনে ১টার দিকে প্রায় দুই থেকে তিন শতাধিক বিক্ষুব্ধ জনতা তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর চালায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসার ভেতরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র বাইরে বের করে সড়কে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই সঙ্গে বাসায় দোতলা ও নিচতলায় আগুন দেয় তারা।
পরে তাদের মধ্য থেকে একটি দল সড়কে হ্যান্ডমাইকে জয়বাংলার গান বাজিয়ে নাচতে থাকে ও গানের তালে তালে জয়বাংলা স্লোগান দিতে থাকে।
বিক্ষুব্ধরা জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। কয়েকটি ফ্যান ও আসবাব লুট করে নিয়ে যায় তারা। একপর্যায়ে কক্ষের ভেতরে থাকা কিছু আসবাব ভেঙে ঘরের ভেতর আগুন ধরিয়ে দেন। পরে বাড়ির সামনে থাকা একটি পুলিশ বক্স ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর তোফায়েল আহমেদ এ বাড়িতে থাকেননি। তিনি বেশিরভাগ সময় বাংলাবাজারের বাড়িতে অবস্থান করতেন।
এ বিষয়ে জানতে ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তোফায়েল আহমেদ ভোলা শহরের এই বাড়িটি তার একমাত্র সন্তান ডা. মুন্নির নামে লিখে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এরপর বাড়িটির নাম ‘প্রিয় কুটির’ রাখা হয়েছে।
এছাড়া গতকাল থেকে সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।