ভারতে পালিয়ে থাকা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনলাইনে দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতের পর গতকাল শুক্রবারও দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ নেতাদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে সর্বাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবারও দিনভর জেলায় জেলায় শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ পরিবারের নামে থাকা ভাস্কর্য, ম্যুরাল, নামফলকসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়েছে; আগুন দেওয়া হয়েছে নেতাদের বাড়িঘরে। অনেক জেলায় দলীয় কার্যালয়েও দেওয়া হয়েছে আগুন।
অপরদিকে মেহেরপুরে মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর করে। ভাঙচুর করা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য দুই কিলোমিটার দূরে কেদারগঞ্জ বাজার এলাকায় সড়কে পড়ে ছিল। আজ শুক্রবার ভোরে স্থানীয় লোকজন মুজিবনগর থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে ম্যুরালের ক্ষতবিক্ষত অংশ তুলে নিয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাসভবনে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসায়ও ভাঙচুর করে তারা।
এ ছাড়া পাকুন্দিয়া পৌর সদর বাজারে শেখ মুজিবের ম্যুরাল, বাজিতপুর পৌর সদর বাজারে শেখ মুজিবের ম্যুরাল এবং একই এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব সরকারের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কের বিন্নাটি মোড়ে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এএইচএম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীসহ সাত বীরশ্রেষ্ঠের ছবিসংবলিত ম্যুরালটি এক্সকাভেটরের সাহায্যে ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এদিকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে আবদুল হামিদের ভাতিজা কিশোরগঞ্জের মিঠামইন সদর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামালের হাওর রিসোর্টে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এলাকাবাসী।
রাজশাহী : রাজশাহীতে এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতিমÐলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বাসভবন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসভবনের সামনের অংশ, সীমানাপ্রাচীরসহ দুপাশ ভেঙে দেওয়া হয়।
পিরোজপুর : পিরোজপুরের নাজিরপুরে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শ ম রেজাউল করিমের বাড়িসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার বাড়ি এবং দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলে। এর মধ্যে নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়; উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন খান, শ ম রেজাউল করিমের ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরে আলম শাহীন, নাজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কান্তি বিশ^াস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, পিরোজপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এসএম বায়জীদ হোসেন, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের (দক্ষিণ) সাবেক সভাপতি এবং মঠবাড়িয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বায়জীদ হোসেনের মঠবাড়িয়ার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী পরিচয়ে এক যুবক পিরোজপুরের নেছারাবাদে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া বীরনিবাসে লাগানো শেখ মুজিবুরের নাম খোদাই করা পাথর টাইলস ভেঙে দেন।
সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের প্রয়াত এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসিবুর রহমান স্বপনের দুটি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করে বিষয়টি প্রচার করেন। যা দ্রæত ভাইরাল হয়। এ বিষয়ে প্রয়াত এমপির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, সয়দাবাদ পুনর্বাসনের ৩টি প্লটে প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপন এমপির ৩টি পাকা বাসা রয়েছে। যার মধ্যে একতলা ও একটি দোতলা পাকা বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হাসিবুর রহমান স্বপন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মারা যান। এর আগেই এসব বাড়ি তিনি মেয়েদের নামে লিখে দিয়েছেন। যা লোকজনকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সদর থানার ওসি হুমায়ন কবির গতকাল শুক্রবার বলেন, ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি, কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। বিস্তারিত জানতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে।
নোয়াখালী : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বৃহস্পতিবার রাতে সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। একই সময় তার পার্শ্ববর্তী সাবেক ডিজিএফআইয়ের ডিজি জেনারেল আকবরের ছোট ভাই চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন ফয়সলের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট চালানো হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা শাখার আহŸায়ক মো. আরিফুল ইসলাম জানান, এই হামলার সঙ্গে তাদের সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ঘটনাটি রাজনৈতিক।
এদিকে নোয়াখালীর হাতিয়ায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সাবেক সংসদ মোহাম্মদ আলীর দুটি বাড়ি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া পুড়িয়ে দেওয়া হয় মোহাম্মদ আলীর ৪টি ট্রলার ও ৫টি স্পিডবোট।
টঙ্গী : টঙ্গীতে গাজীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং তার চাচা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতির বাড়ি ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দুটি বাড়ি ভাঙচুর ও কিছু জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ভোলা : ভোলায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ শেখ মুজিবুরের ৩টি ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বুলডোজার দিয়ে এসব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভোলা পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ৩টি ম্যুরাল এবং বাংলা স্কুল মোড় চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঝালকাঠি : ঝালকাঠির রাজাপুরে দুই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আলম সরফরাজ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এম মনিরুজ্জামান মনিরের উপজেলা সদরের বাড়িতে এ হামলা চালায় তারা।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের শাল্লা ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলায় শেখ মুজিবুর রহমানের তিনটি ও কৃষকের একটি ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা সদরের শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ও সুনামগঞ্জ-বিশ^ম্ভরপুর সড়কের চালবন পয়েন্টে কৃষকের ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেয়।
সিলেট : সিলেটে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসাবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খানের বাসায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
দিনাজপুর : দিনাজপুর জেলা ও শহর আওয়ামী লীগ অফিস বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এদিকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরীর বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের বাসুনিয়াপট্টিতে শহর ও জেলা আওয়ামী লীগ অফিস দুটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, নাজপুর শহরের মুন্সিপাড়ায় সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরীর বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর দুমকিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল দ্বিতীয়বারের মতো ভেঙেছে বিক্ষুব্ধ-জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে ও পরে এক্সকাভেটর দিয়ে ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের তারাকান্দা আওয়ামী লীগের তিনতলা দলীয় কার্যালয় ভেঙে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ভবনটির দেয়াল ও দরজা-জানালা ভাঙচুর করে।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে এবং উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এসব ম্যুরাল হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
জামালপুর : জামালপুরের সরিষাবাড়ীর আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুরে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। একই রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশার বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে পৌর শহরের পাঁচমাথা চত্বর ও বাসস্ট্যান্ড এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অবস্থিত ম্যুরাল দুটি ভেঙে ফেলা হয়। তবে সেখানে থাকা জাতীয় চার নেতা ও সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের ম্যুরাল অক্ষত রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচবিবি থানার ওসি মইনুল ইসলাম।
মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা ভাস্কর্য পড়ে ছিল ২ কিমি দূরে
মেহেরপুরে মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য দুই কিলোমিটার দূরে কেদারগঞ্জ বাজার এলাকায় সড়কে পড়ে ছিল। আজ শুক্রবার ভোরে স্থানীয় লোকজন মুজিবনগর থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে ম্যুরালের ক্ষতবিক্ষত অংশ তুলে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর শতাধিক তরুণ মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভেতরে ঢোকেন। পরে আজ ভোরে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বেশির ভাগ অংশ কেদারগঞ্জ বাজার এলাকায় সড়কে পড়ে ছিল। পড়ে থাকা অংশে মাথা ও হাত ছিল না। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ভাস্কর্যের ভাঙা অংশ নিয়ে গেছে। মুজিবনগর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দেয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও ভাঙচুর করা হয়েছে।
কেদারগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা সফি মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে একদল লোক ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভেতরে রড, হাতুড়ি, লাঠি, লোহাকাটা করাত নিয়ে প্রবেশ করে। তারা ঘণ্টাখানেক পরেই একটি সাদা রঙের ভাস্কর্য মুজিবনগর–মেহেরপুর সড়কের কেদারগঞ্জ বাজার এলাকায় ফেলে রেখে যায়।’
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে শতাধিক তরুণ-যুবক রড, বাঁশ ও হাতুড়ি নিয়ে স্মৃতি কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন। প্রথমে তাঁরা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটির মাথা ভেঙে গুঁড়া করে ফেলেন। একই সময় এলোপাতাড়ি ‘১৭ এপ্রিলের গার্ড অব অনার’ ভাস্কর্যে আঘাত করা হয়। আরও একটি বিক্ষুব্ধ দল অন্য ভাস্কর্যগুলোতে ভাঙচুর চালায়। কমপ্লেক্সের মধ্যে দেশের মানচিত্রের আদলে তৈরি করা মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরে যুদ্ধের বর্ণনা–সংবলিত ছোট ভাস্কর্যগুলো ভেঙে আশপাশে ছুড়ে ফেলা হয়। শহীদ স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকটি ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়।