৩২ নম্বরে বেজমেন্টের পানি অপসারণ, কী পাওয়া গেলো

 ইট–রড খোলায় ব্যস্ত অনেকে
ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৩

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বাড়ির বেজমেন্টে সকাল থেকে পানি সেচ করার কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিস। কয়েকদিন ধরে এই বাড়ির বেজমেন্টের জায়গা নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা। তবে সকাল থেকে সেচের কাজ শেষ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন দুপুর সোয়া ১টার দিকে। এ সময় তারা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, বিল্ডিংয়ের বেজমেন্টে উৎসুক মানুষের ভিড়। নানা বয়সের নারী-পুরুষ সেখানে আসছেন এবং ঘুরে দেখে চলে যাচ্ছেন। তারা বলেন- এখানে কী জানি পাওয়া গেছে, তা-ই দেখতে এসেছি।
বেজমেন্টের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক জনতা
উৎসুক মানুষের ভিড়ে থাকা মাসুম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এখানে ‘আয়নাঘর’ আছে। এখানে পানির নিচে অনেক ঘর আছে, মানুষের ব্যবহার করা জিনিসপত্র পাওয়া গেছে বলে শুনেছি, তবে এখনও দেখিনি।
ওই বিল্ডিংয়ের যে জায়গাটি ঘিরে এতো আলোচনা সেখানে নেমে পানি সেচের কাজ করছিলেন একজন তরুণ শ্রমিক। তিনি পানির নিচে হাতিয়ে দেখেছেন বেশ কিছুক্ষণ। তবে কিছু না পেয়ে পরে উঠে যান।
যাওয়ার সময় তাকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, নিচে কিছু নাই, এটা লিফটের জন্য জায়গা করা বলে মনে হচ্ছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনলাইনে বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদস্বরূপ ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি গুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বাড়ির পাশেই নির্মাণাধীন ভবনে উপস্থিত হয় বিক্ষুব্ধরা। সেই ভবনের কয়েকতলা বেজমেন্ট দেখতে পায় তারা। তার মধ্যে দুই তলা পর্যন্ত নামতে পারলেও পরবর্তী ফ্লোরে পানি দেখা যায়। অনুমান করা হয়, নিচে আরও কয়েকটি তলা রয়েছে।
তবে দুপুরে এই পুরো বেজমেন্টে সরেজমিন দেখা যায়, বেজমেন্টের প্রথম তলা শুকনো থাকলে দ্বিতীয় তলায় পানি জমে আছে। এই পানির ভেতর অনেককেই ‘কোনো কিছু’ খুঁজতে দেখা যায়। আবার কাউকে কাউকে বেরিয়ে থাকা রড কেটে নিয়ে যেতেও দেখা গেছে।
পানি জমে থাকা বেজমেন্ট
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি সেচের কাজ শেষ করেন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। জানতে চাইলে তারা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মী জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। সেচের কাজ শেষ করে দুপুর ১টা থেকে ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর স্টেশনের তিনটি ইউনিট এক এক করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ত্যাগ করে।


কেউ কাটছেন গাছ, কেউ রড, আছেন ভাঙারি ব্যবসায়ীও
সকালে ধানমন্ডির বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ হাতুড়ি দিয়ে ভবনের অবশিষ্ট অংশ ভাঙছেন, কেউ লোহার রড কেটে নিচ্ছেন, ইট খুলে নিচ্ছেন কেউ কেউ। এসব নেওয়ার জন‍্য রিকশা ও ভ‍্যানও আনা হয়েছে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির সামনের রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে। আনারস, পেয়ারা, ফুচকা, পানিপুরি, পাঁপড়, আইসক্রিম, পানি, বাদাম, ছোলা, আখের রস ও চা-সিগারেটের দোকানের সামনেও ছিল মানুষের ভিড়।
৩২ নম্বর বাড়ির সামনেই ঝালমুড়ি বিক্রি করছিলেন সেকান্দর আলী নামের একজন। বেলা দেড়টার দিকে তিনি বলেন, চার দিন ধরে তিনি এখানে দোকান বসিয়েছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনেক মানুষ ঘুরতে আসছেন। ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানান তিনি।