রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এ ছাড়া জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ দাবিতে এই আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিলেন।
আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে পুলিশ এসব আন্দোলনকারীর ওপর চড়াও হয়। তবে পুলিশের লাঠিপেটার পরও আন্দোলনকারীরা শাহবাগ এলাকা ছাড়েননি। এ ঘটনায় শাহবাগে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
দ্রুত নিয়োগের দাবিতে আজ বেলা একটার দিক আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘সুপারিশপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকবৃন্দ তৃতীয় ধাপ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) ’-এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছিলেন। বেলা একটার দিকে তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদক ঘটনাস্থল থেকে জানান, বেলা দুইটার দিকে পুলিশের একটি দল এসে আন্দোলনকারীদের শাহবাগ মোড় থেকে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাঁদের তুলে দিতে প্রথমে লাঠিপেটা করে। পরে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পুলিশ।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন চলছে।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় একই বছরের ২১ এপ্রিল। ১২ জুন ভাইভা সম্পন্ন হয়। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। সুপারিশপ্রাপ্ত হননি—এমন ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছে। সবাই একপ্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবন যাপন করছে। আর কত ধৈর্য ধরতে হবে? এভাবে আর কত দিন মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে? এখন তাঁদের থাকার কথা নিজ নিজ কর্মস্থলে। অথচ তাঁরা এখন রাস্তায়। তাঁদের জীবনের দায়ভার কে নেবে? তাঁরা কার কাছে যথাযথ বিচার চাইবেন? এই মুহূর্তে তাঁদের দাবি, তাঁরা অনতিবিলম্বে কাজে যোগদান করতে চান।