আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মিয়ানমার সীমান্তের ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত ভিডিও সম্পর্কে তিনি বলেন, সীমান্তের ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়। এখন দেখতে হবে আরাকান আর্মি সে দেশে (মিয়ানমার) ফাইট করছে অনেকদিন ধরে। এদের অনেকে এপারে বিয়ে করে ফেলছে- এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু যে হারে ভিডিওতে আসছে বিষয়টা তা নয়। টিকটক ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। সবটা যে সত্য তা না, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও না। এটার ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যালেন্স করতে হবে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সত্য-মিথ্যা যাচাই করে সঠিক ঘটনা প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে ঘটনা ঘটে, সত্য ঘটনা আপনারা (সাংবাদিকরা) অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন। তখন আমাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর) কাজ করতে সুবিধা হয়। কিন্তু অনেক সময় আছে দুই-একজন করে কী- ঘটনা সত্যি নয় কিন্তু প্রকাশ করে দেয়। সে সময় ইনভেস্টিগেশন করে দেখা যায় যে ঘটনা সত্য নয়। তখন অসুবিধা হয়। পাশের দেশের (ভারত) সাংবাদিকরা এর সুবিধাটা নেয়। যেহেতু জানেন যে তারা (ভারতে) মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে।
তিনি বলেন, আরাকানের ওই বর্ডারটা ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা তো মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। কিন্তু বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়, আবার আরাকান আর্মিতে যারা আছে তারাও পয়সা নিচ্ছে। এখানে একটা সমস্যা আছে আপনাকে বুঝতে হবে। এটার সমাধানে চেষ্টা চলছে। তবে সীমান্ত পুরোপুরি রক্ষিত আছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজানে একাধিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া ও সাতকানিয়া এলাকা হলো পাহাড় ও সমতল সংমিশ্রণ। এখানকার সমস্যা অন্যান্য এলাকার চেয়ে ভিন্ন। আমরা এ ব্যাপারে আলাপ করছি, এখানে সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। প্রকাশ্যে কেউ যদি করে থাকে আমি আপনাদের সামনে বলে গেলাম আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাহাড় অশান্ত কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার ছিলাম, সিও ছিলাম ও ব্রিগেড কমান্ডার ছিলাম। পাহাড়ে অশান্ত তো আপনারা দেখেনই। এখন ওই তুলনা করতে গেলে পাহাড় এখন পুরোটাই শান্ত। এই ছোটখাটো অপহরণ আমাদের সমতলেও হচ্ছে। পাহাড় আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে, অনেক শান্ত আছে। আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। সেখানে ল্যান্ডমাইন দিয়ে একসঙ্গে পিকআপ উড়িয়ে দিয়েছে। তিনজন, চারজন করে মারা গেছে। এখন তো পাহাড়ের অবস্থা এত ভালো- আল্লাহ দিলে ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন।