জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, প্রবাসীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলবেন আর নাগরিকত্বের প্রথম অধিকার ভোট দিতে দেবেন না, এটা হবে না। তারা যেন স্বচ্ছভাবে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারেন দেশে কিংবা বিদেশে থেকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (৯ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একটি ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, যুবকরাই লড়াই করে অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, যাদের বয়স নির্বাচনের সিডিউলের আগে ১৮ বছর হয়ে যাবে তাদের ভোটাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। এবারের ভোটে কোনো কালো শক্তি যদি তাদের হাত দিতে আসে তাহলে জুলাইতে যেভাবে কালো শক্তিদের বিতাড়িত করা হয়েছে সেইভাবে এখনও মোকাবিলা করতে হবে। এবারের ভোটের লড়াইয়ে যুবকদের নেতৃত্ব দিতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে জামায়াত আমির বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কথায় আস্থা রাখতে চাই। তিনি এরই মধ্যে বলেছেন এপ্রিলের মধ্যখানে নির্বাচন দেবেন। তিনি যেন জাতিকে দেওয়া তার ওয়াদা রক্ষা করেন। আমরা বলেছিলাম নির্বাচন রমজানের আগে হলে ভালো হয়। একান্ত কোনো কারণে নির্বাচন পেছালে সেটি অবশ্যই এপ্রিল মাস অতিক্রম করা উচিত নয়। এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে। এই শিক্ষা নৈতিক চরিত্রের অধিকারী বানায় না। শিক্ষা অর্জনের পর ফাইল নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে চাকরি পাওয়া যায় না। এই শিক্ষাব্যবস্থাকে বদলে দিতে হবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে প্রথমে শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। শিক্ষা অর্জন করার পর নিজেই চাকরি করবে চয়েজ। শিক্ষা অর্জন করে একজন লোকও বেকার থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, সাড়ে ১৫ বছর যারা জাতির ওপর জুলুম করলো এখনও তারা তা অব্যাহত রেখেছে। মাঝেমধ্যে তারা মাথা উঁচু করে, বিভিন্ন কথাবার্তা বলে। তছনছ করে দেওয়ার কথা বলে। এগুলোর মাধ্যমে জাতিকে অস্থির করতে চায়। আড়াই বছরের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত খুন করলো। এতো কিছুর পরও তারা অনুশোচনা করে না, জাতির কাছে মাফ চাইবে না। যা করেছে জাতির কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট, তার পরও লজ্জিত হয়নি। এগুলোর জন্য তাদের অনুতপ্ত হওয়া উচিত। সেগুলো না করে তারা জাতিকে অস্থির করতে চায়।
বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আমির এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল বাছিতের সঞ্চালনায় এসময় কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শেষ জামায়াত আমির বড়লেখা উপজেলায় ঈদের দিন কোরবানির গোস্ত বিতরণ করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত দুই ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তিনি সবাইকে নিয়ে নিহতদের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।