জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই বিএনপি তার রাজনৈতিক জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমরা এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির যোগাযোগ কমিটি এবং গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খসরু বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার পরেই আসন বণ্টনের বিষয়টি সমাধান করা হবে। তফসিল ঘোষণার পরেই আমরা সব সমমনা দলের সঙ্গে আলোচনা করব।
গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে খসরু বলেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের ফলাফল নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণায় উভয় দলই সন্তুষ্ট উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, তারা ৩১ দফা সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নসহ নির্বাচনের আগে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আন্দোলনের সময় আমরা যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, তেমনি আগামী দিনেও—নির্বাচনের সময়, সরকার গঠনে এবং ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়নে—একসঙ্গে এগিয়ে যাব।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের চলমান বৈঠক সম্পর্কে বলতে গিয়ে খসরু বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে একমত হতে পারে সে বিষয়ের ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
খসরু বলেন, প্রতিটি দলের নিজস্ব রাজনৈতিক ধারণা, দর্শন এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য রয়েছে। সুতরাং, সবকিছুর ওপর ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রয়োজন নেই। কিছু বিষয় বিএনপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ, আবার কিছু বিষয় বিভিন্ন দলের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই পার্থক্যগুলো থাকবে। সেই কারণেই সংস্কারগুলো একমত হওয়া বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করবে এবং অন্যান্য বিষয়গুলো নির্বাচনে জনগণের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি তাদের নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করার পর সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে। ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে বিচার বিভাগ একটি স্পষ্ট সিদ্ধান্ত দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও এটি অনুমোদন করেছে এবং মতামত দিয়েছে। তাই, আইনত তার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উভয়ই আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, যদি সত্যিই আইনের শাসন অনুসরণ করি-তাহলে ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়া স্বাভাবিক। আমরা এখন এই বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি।