জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে বিএনপির বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে তা পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে অভিযাগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে গুলশানের একটি হোটেলে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল।
ফখরুল বলেন, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, আজ যে প্রচার হচ্ছে, অপপ্রচার হচ্ছে এর পেছনে কিন্তু একেবারে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত রয়েছে। সেই চক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধবংস করে দেওয়া।
‘সেই চক্রান্ত হচ্ছে যে, নেতা যিনি উঠে আসছেন, যার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেই তারেক রহমানকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া, তাকে খারাপ জায়গায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের কাছে এই নেতৃত্বটা এসেছে অনেক দিক দিয়ে। পারিবারিক দিক দিয়ে যে কথাটা আপনারা অনেকে বলেছেন, যদিও এই কথাটা শুনতে আমার ভালো লাগে না।কারণ যিনি নেতা আমার মনে হয় তাকে এতে কিছুটা খাটো করা হয়…,তার যে নিজস্ব গুণ-সত্তাগুলো আছে, সেটাকে পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আমরা বোধহয় সেটাকে ছোট করে দেই।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের নিজস্ব গুণ আছে, যে গুণগুলোর জন্য তিনি আজ এই পর্যন্ত এসেছেন, না হলে আসতে পারতেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির যে একটা বিশাল যুব সমাজ আছে- ছাত্র, যুবক শক্তি আছে, এটাকে সংগঠিত করতে হবে। বিএনপির রাজনীতিটা তাদের মাথার মধ্যে ঢোকানোর চেষ্টা করতে হবে, এটা আমাদেরকেই করতে হবে।
‘এই কথা এজন্য বলছি যে, আমরা গত সময়গুলোতে শুধু লড়াই করেছি। কিন্তু সেই লড়াইটাকে সমৃদ্ধ করবার জন্য যে জ্ঞান, সেটা কিন্তু আমরা অনেকে অর্জন করতে পারিনি। আজ তা না হলে যে কথাগুলো আমাদের শুনতে হচ্ছে সেই কথাগুলো হয়তো শুনতে হতো না।’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
২০০২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চীন সফরের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরাও যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে প্রচণ্ড শীত ছিল, ডিসেম্বর মাস বরফ পড়ছিল, বাইরে অনুষ্ঠান করা সম্ভব ছিল না। সেজন্য গ্রেট হলের ভেতরে ম্যাডামকে গার্ড অব অনার রিসিপশন দেওয়া হলো।
তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠানে গার্ড অব অনারের পরে ম্যাডাম চীনের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আমরা যারা তার সঙ্গে গিয়েছিলাম, তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ওই পরিচয় পর্বে আমার মনে আছে, আমার পাশেই ছিলেন আমানউল্লাহ আমান, তার পাশেই ছিলেন তারেক রহমান। যখন ওনার সামনে গিয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, মাই সান। প্রধানমন্ত্রী তার (তারেক রহমান) হাতটা শক্ত করে ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললেন, ক্যারি দ্য ফ্ল্যাগ অব ইউর ফাদার অ্যান্ড মাদার।
ফখরুল বলেন, এই ফ্ল্যাগটা বহন করছেন দেখেই আজ কিন্তু তারেক রহমান, এই কথাটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। উনি নির্যাতন সহ্য করেছেন, শারীরিক নির্যাতন সহ্য করেছেন, নির্বাসিত হয়েছেন, একা থেকেছেন, এই যে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া, সবকিছু মিলিয়ে তারপরও তারেক রহমান মাথা নত করেননি তার মায়ের মতোই। ওনার মা যেমন মাথা নত করেননি, তারেক রহমানও করেননি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহিদ উর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উপদেষ্টা মাহদি আমিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থসহ বিএনপি মতাদর্শের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, ব্লগাররা বক্তব্য রাখেন।