আমরা জুলাইয়ের সঠিক প্রাপ্য দেবো

সালাহউদ্দিন
ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৫ জুলাই ২০২৫, ২৩:৩৬

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমরা জুলাইয়ের সঠিক প্রাপ্য দেবো, রাষ্ট্রীয়-সাংবিধানিক মর্যাদা দেবো। ভবিষ্যতে কোনো শাসক যেন জুলাই নিয়ে আঙুল তুলতে না পারে সে ব্যবস্থা করবো।
তিনি বলেন, অনেকদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকার এ সনদ নিয়ে কাজ করছে। আমরা ১২ ফেব্রুয়ারি বিএনপির পক্ষ থেকে একটি খসড়া সনদ দিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে তারা একটি রিফাইন্ড (পরিমার্জিত) কপি চেয়েছিল, সেটিও আমরা দিয়েছি। তবুও এত ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে যে তারা জুলাই সনদ প্রকাশ করতে পারবে কি না, তা আমি জানি না।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে ছাত্রদল আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানাতে চায়।
তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।
বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, গত বছরের এ দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। আমরা এ ঘটনাকেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের টার্নিং পয়েন্ট মনে করি।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগনি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমান বিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিত, আমাদেরও ‘সহ্যের সীমা’ আছে। ‘৭১ ও ২৪-এর পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন বলেন, ঐক্য আমরা চাই। তবে ঐক্য তাদের সঙ্গেই চলে যারা বাংলাদেশপন্থাকে বিশ্বাস করে। এসময় একাত্তরের গণহত্যাকারী কিংবা চব্বিশের গণহত্যাকারী কাউকে ছাড় নয় বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ১৫ জুলাইয়ে একাত্তর হলের সামনে যে হামলা হয় তাতে হাতে হাত রেখে লড়াই করেছিল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। আমরা ছিলাম সমন্বয়ক কিন্তু সত্য এটাই যে ছাত্রদল, শিবির, বাম সংগঠন, ইসলামি সংগঠনসহ সবাই আমাদের সঙ্গে ছিল। সবাইকে ছাড়া এ অভ্যুত্থান কখনো সফল হতো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এ অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র মজলিশ, ছাত্রফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশন সোসাইটি, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে ছাত্রশিবিরের কোনো নেতাকর্মীকে অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।