প্রসঙ্গ বাংলাদেশের শুল্ক আলোচনা

ঢাকার চীনার দিকে অতিরিক্ত ঝোঁক ঠেকানোসহ যেসব বিষয়ে তৎপর যুক্তরাষ্ট্র

বিশেষ প্রতিবেদন
  ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫৪

কেবল বাণিজ্য নয়, বৃহত্তর কৌশলগত ক্ষেত্রেও ঢাকার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চায় ওয়াশিংটন। যেটির মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশ যেন চীনের দিকে অতিরিক্ত না ঝোঁকে। পাশাপাশি ঢাকা যাতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক কৌশলের (আইপিএস) পক্ষে থাকে সেটিও চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কার্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দফার বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ওই বৈঠক হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইপিএস হলো যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিস্তৃত কৌশল। এর লক্ষ্য হচ্ছে পুরো অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করে চীনের প্রভাব মোকাবিলা করা। শুল্ক আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে চীনের বাড়তে থাকা ব্যবসা-বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দেশটি চায়, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উৎসাহিত না করুক।
নিষেধাজ্ঞার নীতি
সূত্র আরও জানায়, বৈঠকে আরও কিছু স্পর্শকাতর শর্তে বাংলাদেশ দরকষাকষি করছে। এমন শর্ত রয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো দেশকে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তবে বাংলাদেশকেও তা মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকেও ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া, যেসব মার্কিন পণ্যকে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে, সেগুলো অন্য কোনো দেশকে না দেওয়ার শর্ত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এসব কৌশলগত বিষয় নিয়ে গত রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কিছুটা আভাস দিয়েছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। সে সময় তিনি বলেছিলেন, দ্বিতীয় দফার আলোচনায় একটি প্রাথমিক ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে তারা নিরাপত্তা উদ্বেগসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।
বাণিজ্য উপদেষ্টার বক্তব্য
এদিকে, ওয়াশিংটন থেকে ফিরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সোমবার ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বাণিজ্যের বাইরে বিভিন্ন শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করলেও বিস্তারিত কিছু বলেননি। অনেক প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার কারণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট (গোপনীয়তার চুক্তি) রয়েছে। এর ফলে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনা হবে। এ জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময় পাওয়া যাবে।
সূত্র: সমকাল