কুমিল্লার মুরাদনগরে আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ মেম্বারসহ চিহ্নিত আ. লীগের সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অনুসারীরা। মিছিল নিয়ে তারা মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে থাকা বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৬ সাংবাদিকসহ বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়। গতকাল বিকালে উপজেলা সদরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, গতকাল আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। আমাদের নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণ এবং রিমান্ড মঞ্জুরের প্রতিবাদে ছাত্রদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা যখনই কর্মসূচি দিই তখনই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের অনুসারীরা পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টি করতে চায়। আজকে বিএনপির কার্যালয়ে তারা হামলা চালিয়েছে। পুলিশের সহায়তায় তারা এ হামলা চালায়। এতে যুবদল নেতা ওমর উল্লাহ, ইমন, পারভেজ, কামাল হোসেনসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত যুবদল কর্মী উমর উল্লাকে রক্তাক্ত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করে।
আসিফ মাহমুদের অনুসারীদের ভাষ্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীরা তাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছেন। এতে তাদের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন দাবি করেছেন, আসিফের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে শাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছেন। এতে বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন (অঞ্জন) এ ঘটনার জন্য আসিফ মাহমুদের লোকজনকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, গত দুই দিন বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। আজ ছাত্রদলের কর্মসূচি ছিল। তাদের লোকজন বিক্ষোভ মিছিল করতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। তখন ওই পক্ষের সমাবেশ থেকে দলীয় কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পরে নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। তারা তাদের নেতা কায়কোবাদকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়েছেন। মহিউদ্দিনের দাবি, বিএনপি কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করলেই তারা পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন। আসিফ মাহমুদের নির্দেশে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। যারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তারা এনসিপির লোকজন। আর মুরাদনগরে এনসিপি মানে আওয়ামী লীগ।
মুরাদনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিন কাদের খান বলেন, আজ এনসিপির লোকজনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ছিল। তাদের সমাবেশ চলাকালে ইটপাটকেল নিক্ষেপকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। যারা উপদেষ্টার পক্ষে সমাবেশ করেছেন, তাদের লোকজন কর্মসূচির বিষয়ে লিখিতভাবে পুলিশকে জানিয়েছিল। তবে বিএনপি পাল্টা কর্মসূচি দিতে পারে, এমন তথ্য পুলিশের কাছে ছিল। এ জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। তারা ঘটনার বিষয় বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।