সরকারের হুমকি-ধমকিতে লাভ হবে না

নির্বাচন দিতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে

সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে মির্জা ফখরুল
সিলেট সংবাদদাতা
  ২০ নভেম্বর ২০২২, ১১:৫৭

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের হুমকি-ধমকিতে লাভ হবে না। বিজয় ছাড়া মানুষ ঘরে আর ফিরবে না। গতকাল শনিবার সিলেট মহানগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় গণসমাবেশে তিনি এই হুশিয়ারি দেন। জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, নেতাকর্মী হত্যার প্রতিবাদ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় এই বিভাগীয় সমাবেশ আনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হুমকি দেন, আমরা যদি আন্দোলন করতে যাই তা হলে হেফাজতের মতো অবস্থা হবে। এসব হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে, বিজয় ছাড়া আর ঘরে ফিরবে না। আমাদের লক্ষ্য, হারিয়ে যাওয়া ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে আনব। দেশের সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানকে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, আসুন সেভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করে জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করি। খুব লম্বা লম্বা কথা বলে, সংবিধান অনুযায়ী নাকি নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধান ১০ বার কাটাছেঁড়া করেছো, নিজে নিজে তৈরি করেছো, বিচার বিভাগকে পকেটেস্থ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে? সেই সংবিধান আমরা মানি? দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছিলেন, নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। যারা এর বিরোধিতা করবে তারা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
এ সময় বিএনপি মহাসচিব সারাদেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি, গ্রেপ্তার এবং নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘ভোলাতে আমাদের আব্দুর রহিম, নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহীদুল ইসলাম শাওন, যশোরে আবদুল আলিমকে পুলিশ হত্যা করেছে। মনে করেছে, গুলি ও নির্যাতন এবং হত্যা করলে সবকিছু থেমে যাবে। আরও সবাই উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত হয়েছে। একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ আরও বেশি করে সফল হচ্ছে।’
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে টাকা লুট করে দলীয় কর্মকাণ্ড করছেন। আবার আমাদের সমাবেশ করতে যত টাকা খরচ হয়, তার চেয়ে চারগুণ টাকা সমাবেশ পণ্ড করতে সরকার খরচ করে। এসবের হিসাব দিতে হবে। তারপরও বিএনপির সমাবেশ হয়, থামিয়ে রাখা যায় না। 
সিলেট সমাবেশ বাস্তবায়নের উপদেষ্টা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো অন্যায় চলবে না। আমরা এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব, যেমনটা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশালকে দূর করে। 
সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইমুয় চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ চৌধুরী, মহানগর সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকীর পরিচালনায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ফজলুর রহমান, তাহসিনা রুশদীর লুনা, এনামুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কেন্দ্রীয় নেতা এম নাসের রহমান, জিকে গউছ, কলিম উদ্দিন মিলন, শাম্মী আখতার, নিলোফার চৌধুরী মনি, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল কাহের শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, ফয়সাল চৌধুরী, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরীন খান, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলে শাহ নেসারুল হক, জাসাসের হেলাল খান, শ্রমিক দলের মেহেদী আলী খান, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।