৫৩তম সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেতে উঠে এক আনন্দঘন উৎসবে

জাতির প্রত্যাশা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে : রাষ্ট্রপতি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
  ২০ নভেম্বর ২০২২, ১৩:১৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে গতকাল সমাবর্তন বক্তা জ্যাঁ তিরোলকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ঢাবি আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

ড. তিরলকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেওয়া হয় (ওপরে)। গ্র্যাজুয়েটদের উচ্ছ্বাস
৫৩তম সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেতে উঠেছিল এক আনন্দঘন উৎসবে। সবার পরনে ছিল কালো গাউন, মাথায় ঝালরওয়ালা চৌকোনা টুপি। পুরো ক্যাম্পাস যেন মেতেছিল উৎসবের আমেজে। গতকাল এ সমাবর্তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুুল হামিদ। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. জ্যঁ তিরল। ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এবার বহুল আকাক্সিক্ষত ডিগ্রি নিয়েছেন। সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক, আর তা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা চাই উপাচার্যের নেতৃত্বে ও ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হোক, অর্থাৎ সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে উঠুক। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি। সমাবর্তন বক্তা ড. জ্যঁ তিরল বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নতির প্রশংসা করেন। নবীন গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশটিকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে আপনাদেরই কাজ করতে হবে।


এ উপলক্ষে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল থেকে শুরু হয় চ্যান্সেলরের শোভাযাত্রা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ততক্ষণে জড়ো হন প্রায় ২০ হাজারের বেশি গ্র্যাজুয়েট। শোভাযাত্রা অনুষ্ঠান মঞ্চে আগমনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় মঞ্চে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আসন গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং অনুষদসমূহের ডিনরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। এরপর সমাবর্তন বক্তার সাইটেশন পাঠ করেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। পরে তাকে ডক্টর অব ল’জ (অনারেস ক’জা) ডিগ্রি প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরকে প্রদান করা হয় স্মারক ক্রেস্ট। পরে চ্যান্সেলর তাঁর ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে একে একে পিএইচডি, ডিবিএ, এমফিল, স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ও স্বর্ণপদক প্রদান করেন। সমাবর্তনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে পদচারণ ছিল গ্র্যাজুয়েটদের। ক্যাম্পাস মাতিয়ে বেড়ান তারা। ছবি তোলেন দীর্ঘদিনের স্মৃতিবিজড়িত ক্যাম্পাসের নানান জায়গায়। বাহারি ঢঙে, একা কিংবা দলগতভাবে ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাপনী পর্বকে ক্যামেরাবন্দি করেন। কারও কারও সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তাদের পিতা-মাতাও। হৈহুল্লোড় আর ছবি তোলার পর্ব শেষে সমাবর্তনে যোগ দেন তারা। উল্লেখ্য, এই সমাবর্তনে ৩০ হাজার ৩৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ও উপাদানকল্প কলেজ/ইনস্টিটিউটের গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের মূল ভেন্যু বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ ভেন্যু থেকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, এই সমাবর্তনে ৩০ হাজার ৩৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ও উপাদানকল্প কলেজ/ইনস্টিটিউটের গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের মূল ভেন্যু বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ ভেন্যু থেকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করেন।