বিয়ের ১২ বছর পর মা হতে যাচ্ছেন ভারতীয় সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে। কিছু দিন আগে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয় বিএফএল লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৪। এতে প্রদর্শিত হয় রাধিকা অভিনীত ‘সিস্টার মিডনাইট’ সিনেমা। এ আসরে অন্তঃসত্ত্বা রাধিকা উপস্থিত হয়ে সবাইকে চমকে দেন। কারণ তার মা হতে যাওয়ার খবরটি পুরোপুরি গোপন ছিল।
ব্রিটিশ ভায়োলিন বাদক ও সংগীতজ্ঞ বেনেডিক্ট টেলর ও রাধিকা দম্পতি প্রথমবার বাবা-মা হতে যাচ্ছেন। কিন্তু রাধিকা আপ্তে জানালেন, তিনি সন্তান চাননি। কেবল তাই নয়, তার স্বামী বেনেডিক্টও সন্তান নিতে চাননি বলেও জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
রাধিকা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। জুমে তার সঙ্গে কথা বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এ আলাপচারিতায় গর্ভকালীন সময়ে কেমন আছেন জানতে চাইলে রাধিকা আপ্তে বলেন, ‘সত্যি বলতে খুব ভালো নেই। গত পাঁচ রাত ধরে ঘুমাতে পারি না। তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে অনীদ্রা দেখা দিয়েছে, আমি ঘুমাতে পারছি না। সুতরাং একেবারেই ভালো নেই।’
গর্ভকালীন এই যাত্রার কথা জানাতে গিয়ে বিস্ফোরক তথ্য জানান রাধিকা। এ অভিনেত্রী বলেন, ‘বাচ্চা নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমার কখনো ছিল না। সুতরাং এটি খুবই প্যাঁচানো এবং টার্নিং পয়েন্ট ছিল। এটি দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া ছিল। আমি কখনো বাচ্চা চাইনি।’
অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বিস্মিত হয়েছিলেন রাধিকা এবং তার স্বামী বেনেডিক্ট। অনেকটা মজার ছলে রাধিকা বলেন— ‘আমরা জানি না একটি বাচ্চাকে কীভাবে পোশাক পরাতে হয়!’
রাধিকা মনে করেন, গর্ভাবস্থা কঠিন। তার ভাষায়— ‘গর্ভবতী হওয়ার অর্থ কী বা যখন কেউ অন্তঃসত্ত্বা হয়, তখন কী ঘটে সে বিষয়ে আমি জানতাম না। এসময় শরীর কেমন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়? গর্ভাবস্থা খুব কঠিন, এটা মজার কিছু না। কারো কারো কাছে এটি ভালো; অন্যদের চেয়ে তাদের কাছে এটি সহজ।’
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ক্রমাগত শরীর পরিবর্তন হয়। এ তথ্য উল্লেখ করে রাধিকা আপ্তে বলেন, ‘গর্ভাবস্থাটা খুব কঠিন, এ সময়ে শরীর ক্রমাগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। সুতরাং এই জার্নিটা অনেক জটিল। এ বিষয়ে আমি মিথ্যা বলব না। কেউ আসছে, তার জন্য মানসিক-শারীরিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করাও কঠিন। বিশেষ করে আপনি যদি সক্রিয় মানুষ হন।’
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের স্মৃতিচারণ করে রাধিকা আপ্তে বলেন, “প্রথম ট্রাইমেস্টারে আমার কঠিন সময় গিয়েছে। কারণ আমার ভয়ানক ফুসকুড়ি হয়েছিল, ভয়ানক কোষ্ঠকাঠিন্য ছিল। বমি বমি ভাব ছিল। ওই সময়ে ৩ মাস আমি ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় শুটিং করেছি। মনে হতো আমি গলে যাচ্ছি। মানুষ আমাকে বলে, ‘তুমি সুখী হবে। কারণ তোমার সন্তান আসছে।’ আমি তাদের ঘুষি মারতে চেয়েছিলাম। তাদের বলতাম, আমি কষ্ট পাচ্ছি আর তোমরা বলছো সুখী হবো।”
লন্ডনে নাচ শিখতে গিয়ে ২০১১ সালে ব্রিটিশ ভায়োলিন বাদক ও সংগীতজ্ঞ বেনেডিক্ট টেলরের সঙ্গে রাধিকার পরিচয় হয়। ২০১২ সালে বিয়ে করেন এ জুটি। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ১২ বছর। অবশেষে এ দম্পতির সংসার আলো করে আসছে নতুন অতিথি।