পরী-রাজের নাটকের শেষ কোথায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:০২

ঘটনা পটিয়সী নারী পরীমনি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই হিট সিনেমা দিতে না পারলেও আলোচনার জন্ম দিতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি। তবে সংসার জীবন শুরু করার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার হয়তো আলোচিত-সমালোচিত এই নায়িকার জীবনে একটু স্থিতি আসবে; কিন্তু বছর পেরোতে না পেরোতেই সংসারে উঠেছে ঝড়। আর সেই ঝড়ই এখন বইছে শোবিজে। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই আলোচনার নাম পরী-রাজের সংসার; কিন্তু আজ বিচ্ছেদ তো কাল মিলন। এভাবেই কাটছে গত কয়েকদিন। তাই শোবিজে এখন একটাই প্রশ্ন- ‘পরী-রাজের নাটকের শেষ কোথায়?’
বছরের শুরুরলগ্নেই প্রকাশ্যে আসে তাদের দাম্পত্যের টানাপড়েনের বিষয়টি। পরীর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে রীতিমতো আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় শোবিজ অঙ্গনে। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে পরী লিখেন- ‘আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে।’
এই এক কথাতেই যেন সব শেষ হয়ে গেল! এর পর পরী ও রাজের বক্তব্য শুনে অনেকটা স্পষ্ট- ‘বিচ্ছেদ’-এর পথেই হাটছেন তারা। আসলেই কি তাই? সাধারণ মানুষ হিসেবে সবাই ধরে নিয়েছে রাজ-পরীর সংসার ভেঙে গেছে। তারা এখন দুই মেরুর বাসিন্দা।
পুরো বিষয়টা কিন্তু তা নয়। গত মঙ্গলবার ভোরে রাজের স্ট্যাটাস, ‘হ্যালো গডফাদারস অ্যান্ড গং। আই ওয়ান্ট টু নো ইউ গাইজ। আই লাইভ ইন ঢাকা, আই উড লাভ টু চিয়ার্স।’ রাজের এমন পোস্টে স্পষ্ট, তিনি আড়াল থেকে কোনো ‘গড ফাদার’-এর কাছ থেকে হুমকি পেয়েছেন বা পাচ্ছেন। আর সেটির কারণ হয়তো পরী! সেই উড়ো হুমকিদাতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করতে চান রাজ; কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে- রাজ যখন এই স্ট্যাটাস লিখছিলেন তখন তিনি পরীমনির পাশেই ছিলেন! আর পরীও তাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছিলেন, ‘কী লিখছো তুমি।’ উত্তরে রাজ বলেছিলেন- ‘একটা স্ট্যাটাস দিচ্ছি। পরে দেখে নিও।’ আর এই তথ্য আমাদের সময়কে জানিয়েছেন পরীমনিই।
অভিনেত্রীর ভাষ্য- “দুইদিন পর গতকাল রাতে রাজ বাসায় ফিরেছে। আর এসেই বিছানায়। তার পর মোবাইল হাতে নিয়ে ৫ মিনিট লাগিয়ে একটি স্ট্যাটাস লিখছে। আমি জানতে চাইলাম, ‘কী লিখছো তুমি।’ কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলল, ‘একটা স্ট্যাটাস দিচ্ছি। পরে দেখে নিও।’ এর পর ওর স্ট্যাটাসটা দেখলাম। সকাল থেকে মানুষজন ফোন দিয়ে আমাকে পাগল বানিয়ে ফেলছে। আর রাজ আরামে ঘুমিয়ে আছে। বলেন, কী বলব?”
তা হলে রাজ আপনার পাশে থেকেই ‘হুমকি’র স্ট্যাটাসটা দিয়েছেন। আসলেই কি তাকে কেউ হুমকি দিচ্ছে? উত্তরে পরী বলেন, ‘আমার জানা নেই, এটা ও-ই ভালো বলতে পারবে। সকালে ওকে আমি এই প্রশ্ন বহুবার করেছি। উত্তর শুনলে আপনারাও হাসবেন!’
বলেন আমরাও একটু হাসি, “রাজ বলে- ‘কিসের গড ফাদার, কিসের হুমকি! কে বলেছে এসব কথা!’ আমি তখন ওকে বলি, তুমিই তো ফেসবুকে বলেছ। রাজ বলে, ‘আমি বলছি, কী বলো! আমাকে আবার হুমকি কে দেবে?’ তখন আমি ওকে বলি, আমি কি তোমাকে বা আমার পক্ষ থেকে কি কেউ তোমাকে হুমকি দিয়েছে? উত্তর ছিল, না। এখন বলেন, আমি এই পাগলকে নিয়ে কী করব”- বললেন পরীমনি।
আপনি বলেছেন, রাজ দুদিন পর বাসায় ফিরেছে। তিনি তা হলে এই দুদিন কোথায় ছিলেন; জানতে চেয়েছেন? উত্তরে পরী বলেন, ‘জানার মতো কোনো পরিস্থিতিতে ও ছিল না। এমন অবস্থায় বাসায় ফিরেছে, তাকে প্রশ্ন করেও কোনো লাভ হয়নি। আমি ওকে বলেছি, আমি রাতে খাইনি। তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করব; কিন্তু আমার কোনো কথাই ও কানে নেয়নি। ছেলেটাকেও ধরল না, বিছানায় শুয়ে পড়ল।’
তা হলে রাজকে হুমকি দিল কোন গড ফাদাররা- এমন প্রশ্নের উত্তরে ‘বিশ্বসুন্দরী’খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা ওকেই জিজ্ঞেস করেন। এই তো মাত্র (বিকাল ৪টা) ঘুম থেকে উঠেছে। আমার সামনেই আছে। একটা ফোন দেন। জিজ্ঞেস করেন কে ওকে হুমকি দিয়েছে। আমারও জানা দরকার আমার স্বামীকে কারা হুমকি দিল।’
পরীর এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শরিফুল রাজকে ফোন দেওয়া হয়। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি তো যা বলার বলেছি। এখন দেখার অপেক্ষায় আছি তাদের। পরে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছি।’ বলেই ফোনটি রেখে দেন।
এর আগে দুপুর ১২টায় রাজ জানান, তিনিও অপেক্ষায় আছেন তাদের (গডফাদার) দেখার! হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। এসবের তোয়াক্কা করেন না রাজ। আর শান্তিপ্রিয় মানুষ খেপলে তাকে কিন্তু দমানো যায় না- এটাও স্মরণ করিয়ে দেন ‘পরাণ’খ্যাত এই অভিনেতা।
রাজ-পরীর বক্তব্য শুনে যেন কোনো হিসাবই মিলছে না। আলাদা করে দুজনের বক্তব্য শুনলে বা ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে মনে হচ্ছে- তাদের সম্পর্ক ভাঙনের দিকে। আর দুজন দুই মেরুর বাসিন্দা; কিন্তু বাস্তবতা উল্টো। এক ছাদের নিচে বসবাস করেই তারা জন্ম দিচ্ছেন সব আলোচনা-সমালোচনার। কোথায় গিয়ে শেষ হবে তাদের ‘নাটক’! এর উত্তর তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে রাজ-পরীর ভক্ত ও শুভাকাক্সক্ষীদের চাওয়া- একমাত্র ছেলে রাজ্যের (শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য) দিকে তাকিয়ে হলেও মান-অভিমান ভুলে তাদের একসঙ্গে থাকা।