আতিফ আসলাম একজন পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী হলেও ভারত ও বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় তিনি। তার জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে ‘তু জানে না’, ‘তেরে বিন’,‘ও লামহে ও বাতে’,‘আদাত’, ‘তেরে সং ইয়ারা’ ইত্যাদি।
তার কনসার্ট বাংলাদেশে সবসময়ই বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। উপচে পড়ে ভিড় দেখা যায় শ্রোতাদের। গতকাল শুক্রবার, ২৯ নভেম্বরও ঢাকার আর্মি স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। আতিফ আসলামও এলেন সুরে সুরে ভালোবাসা ছড়িয়ে। তবে অনেক বিতর্কিত ঘটনা ও অব্যবস্থাপনার জন্য অনেক ভোগান্তি নিয়ে শেষ হলো আলোচিত ‘ম্যাজিক্যাল নাইট ২.০’ শিরোনামে কনসার্ট।
এর আয়োজন করেছিল ট্রিপল টাইম কমিউনিকেশনস। শিল্পী ও গানের পসরায় উপভোগের কমতি না থাকলেও কনসার্টটি চরম অব্যবস্থাপনার উদাহরণ হয়ে রইল! অনুষ্ঠানে আসা দর্শক থেকে শুরু করে গণমাধ্যমকর্মীরা মন্তব্য করেছেন, কনসার্টের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে চরম অব্যবস্থাপনা।
চরম ভোগান্তির কনসার্টে মন মজিয়ে গেলেন আতিফ আসলাম
সবচেয়ে বিরক্তির কারণ হয়েছে কনসার্টের মূল আকর্ষণ আতিফ আসলাম মঞ্চে ওঠার পর লোডশেডিংয়ের জন্য। এছাড়া টিকিট কেটেও দর্শকের ভেন্যুতে প্রবেশ করতে না পারা, ভেন্যুর ফটকে হয়রানি, ধারণক্ষমতার বাইরে দর্শকের উপস্থিতি, সময়মতো কনসার্ট শুরু না হওয়াসহ নানা অভিযোগ ছিল আয়োজক প্রতিষ্ঠান নিয়ে।
আর কনসার্টের জন্য দিন থেকে রাত পর্যন্ত উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কে তীব্র ট্রাফিক জ্যামে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীবাসী। ফেসবুকে সে নিয়ে অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
কনসার্টের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ফেসবুকে আয়োজকদের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়েন চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। তবে কিছুক্ষণ পরই তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নেন। তবে পোস্ট সরাননি আরেক অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। তিনি কোনোভাবে আর্মি স্টেডিয়ামে ঢুকতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি কনসার্টকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক জ্যামের ভোগান্তি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
‘ম্যাজিক্যাল নাইট ২.০’ শীর্ষক কনসার্টের টিকিট বিক্রি হয়েছে ম্যাজিক্যাল জোন, ফ্রন্ট জোন ও জেনারেল—এই তিন ক্যাটাগরিতে। ম্যাজিকেল জোনের টিকিটের মূল্য রাখা হয় ১০ হাজার টাকা।
‘ম্যাজিক্যাল নাইট ২.০’ শিরোনামের কনসার্ট বিকেল চারটায় শুরুর কথা থাকলেও এদিন কনসার্ট শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর। আতিফ আসলাম যখন মঞ্চে ওঠেন, তখন রাত পৌনে ৯টা। ওঠার পরপরই লোডশেডিংয়ের কারণে ধাক্কা খান তিনি। ২০ মিনিট বিরতির পর গাওয়া শুরু করেন। একটানা গান করেন তিন ঘণ্টা।
তিনি তার পরিবেশনা শুরু করেন ‘জিতনি দোফা’ দিয়ে। পুরো স্টেডিয়াম সমস্বরে গেয়ে ওঠে আতিফের সঙ্গে। একে একে আতিফ গেয়ে শোনান ‘তু চাহিয়ে’, ‘ও লামহে’, ‘আদাত’, ‘তেরে বিন’, ‘তু জানে না’র মতো জনপ্রিয় গানগুলো। মঞ্চে দাঁড়িয়ে আতিফ বললেন, ‘বাংলাদেশ আমার সেকেন্ড হোমের মতো। আর আপনারা আমার সবচেয়ে ভালো শ্রোতা।’
তার গানের সুর-তালে মন মজিয়ে সারাদিনের ভোগান্তি আর ধকল মুছে মধ্যরাতে বাড়ি ফেরেন শ্রোতারা।
এই কনসার্টে আতিফ আসলাম ছাড়াও গান করেছেন তাহসান খান। পরিবেশনায় আরও ছিলেন বাংলাদেশের কাকতাল ব্যান্ড, পাকিস্তানের গায়ক আবদুল হান্নান।