অভিনয়শিল্পী তানজিকা আমিনের মা ইসমত আরা মিনার বিয়ে হয় আজ থেকে ৪০ বছর আগে। মা যত্নে রেখে দিয়েছিলেন তাঁর বিয়েতে পরা শাড়িটি। মায়ের বিয়ের ৪১ বছরে এসে মেয়ে তানজিকা বিয়ে করেছেন তাঁর মায়ের বিয়ের শাড়িটি পরে। আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার বেইলি রোডে তানজিকাদের বাসায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এতে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা উপস্থিত ছিলেন। প্রথম আলোকে বিয়ের খবর নিশ্চিত করেছেন তানজিকা।
মায়ের শাড়ি পরে বিয়ের প্রসঙ্গে তানজিকা বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আগে আমার মায়ের বিয়ের শাড়ি দিয়ে ওড়না বানানোর ইচ্ছা ছিল। বিয়ের ওড়না। যে আমার বিয়ের কস্টিউম করেছে, সে বলল, “আপু আন্টির শাড়িটা এত সুন্দর! এটা কেটে ওড়না কেন বানাবে? এটা কেন তুমি বিয়েতে পরছ না?” তারপর ভাবলাম, আসলেই কেন নয়! এরপর সেটার সঙ্গে মানিয়ে যায় সে রকম ওড়না, ব্লাউজ ও অন্য সবকিছু সে বানিয়ে দিয়েছে। আমি যে গয়না পরেছি, সেটাও ৫০ বছর আগের নকশা করা।’
কথায় কথায় তানজিকা বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি যে জীবনে সিঙ্গেল থাকব। সব সময় মনে হয়েছে, বিয়ের জন্য এটা সঠিক সময় নয়। এবার মনে হয়েছে, সঠিক সময় এবং সঠিক মানুষের দেখাও পেয়েছি। তাই বিয়ের সিদ্ধান্ত না নিয়ে পারিনি।’
হুট করে বিয়ের কাজ সেরে ফেললেও এ মাসের মধ্যেই বিবাহপরবর্তী বাকি সব আনুষ্ঠানিকতা করার ইচ্ছা রয়েছে তানজিকার। এই অভিনয়শিল্পীর বর অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী। তাঁর নাম সাইফ বাসুনিয়া। ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি সিডনিতে থাকেন। তানজিকা জানান, ২০১৮ সাল থেকে সাইফের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। এরপর নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। বিয়ের পর কি দেশে থাকবেন নাকি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাবেন? এমন প্রশ্নে তানজিকা বলেন, ‘অভিনয় তো আমার প্রাণের জায়গা। ঢাকা আমার প্রাণের শহর। তবে কিছু কারণে আমাকে তো যাওয়া–আসার মধ্যে থাকতে হবে।’
বিয়ে প্রসঙ্গে তানজিকা বলেন, ‘আমাদের শুধু আকদ হয়েছে। জুমার আগে, একেবারে পারিবারিকভাবে। আত্মীয়স্বজনেরা ছিলেন। সাইফকে আমি ২০১৮ সাল থেকে চিনলেও কখনো তাঁকে বিয়ে করব, এমনটা ভাবিনি। তবে আমাদের বন্ধুত্ব ছিল। সেটা যে প্রেম বা বিয়েতে গড়াবে, তা ভাবিনি। অবশেষে তা হয়ে গেল।’
কবে থেকে ভাবলেন, এই বন্ধুকে বিয়ে করা যায়? ‘দুই মাস আগে ভাবলাম, এর সঙ্গে বিয়ে নিয়ে ভাবা যায়। তবে বিষয়টা পুরোপুরি পরিবারের মধ্যে ছিল। সাইফকে আমার মায়ের খুব ভালো লাগত। ভীষণ পছন্দ করতেন, আগে থেকে চিনতেনও।পারিবারিকভাবে বিয়ে নিয়ে আমার ওপর চাপও ছিল। একটা সময় এসে পারিবারিক চাপ মেনে নিতে হয়েছে। এটাও ঠিক যে আমারও তাকে ভালো লাগত। আমি জানতাম, সে খুব ভালো একজন মানুষ। মানবিক মানুষ। মনে হয়েছে, সে–ই আমার জন্য সবচেয়ে সঠিক মানুষ, যাকে জীবনসঙ্গী করা যায়।’ বলেন তানজিকা আমিন।
সবচেয়ে সেরা মানুষ কবে থেকে বুঝলেন? এমন প্রশ্নে তানজিকা বলেন, ‘এটা বুঝেছি, যখন থেকে মনে হলো জীবনসঙ্গী করা যায়, তখন থেকে। বন্ধু হিসেবেও যখন দেখছিলাম, তখনো বুঝেছি সে অসম্ভব ভালো একটা মানুষ। সে আমাকে বোঝেও; যেটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি।’
উল্লেখ্য, এটি তানজিকার দ্বিতীয় বিয়ে। এক যুগ আগে তানজিকা বিয়ে করেছিলেন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝরকে। তাঁদের সেই দাম্পত্য সম্পর্ক কয়েক বছর টিকেছিল।