বাংলাদেশি মাঙ্গা নিয়ে কপিরাইট দ্বন্দ্ব, শান্তনা-শান্তুমার জয়

বিনোদন ডেস্ক
  ২৬ মে ২০২৫, ১৮:২৬

বাংলাদেশের প্রথম প্রফেশনাল মাঙ্গা আর্টিস্ট শান্তনা ও শান্তুমা কপিরাইট সংক্রান্ত এক জটিলতায় অবশেষে স্মরণীয় এক জয় পেয়েছেন। শান্তনা-শান্তুমা ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম দেশীয় মাঙ্গা প্রকাশ করেন। ২০১৮ সালে ‘মাঙ্গা স্টেজ’ নামে একটি প্রকাশনীও চালু করেন তারা। সেটি শুধুমাত্র মাঙ্গা নিয়েই কাজ করে।
তবে ২০২৩ সালে ‘ফোরনেটশা বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ‘সোর্স’ নামের একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করে তাদের তৈরি মাঙ্গাকেই দেশের প্রথম মাঙ্গা বলে দাবি করে। এ নিয়ে শান্তনা-শান্তুমা কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দাখিল করেন।
প্রথমে প্রতিষ্ঠানটি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে সমঝোতা করে। কিন্তু ২০২৪ সালে আবারও একই মিথ্যা দাবি করে প্রচার শুরু করে তারা।
ফলে ২১ অক্টোবর ২০২৪ সালে শান্তনা-শান্তুমা আবারও অভিযোগ করেন। দীর্ঘ শুনানির পর ২০ জানুয়ারি কপিরাইট অফিসে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। এরপর ৩০ এপ্রিল তারিখে রায়ে বলা হয়, শান্তনা-শান্তুমাই দেশের প্রথম স্বীকৃত মাঙ্গা আর্টিস্ট।
রায়ে এটাও বলা হয়, ‘সোর্স’ ও ‘ফোরনেটশা বাংলাদেশ’ মিথ্যা দাবি করে শান্তনা-শান্তুমার মানহানি, মানসিক চাপ ও আর্থিক ক্ষতি করেছে। সেজন্য মিথ্যা সব কনটেন্ট ও প্রচার সামগ্রী অবিলম্বে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে কপিরাইট অফিস। নইলে শান্তনা-শান্তুমা কপিরাইট আইনের ৭৭, ৮৪, ১০৬ ও ১০৭ ধারায় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
এই রায়ের মধ্য দিয়ে দেশের মাঙ্গা শিল্পে এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। এটি ভবিষ্যতে শিল্পীদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ‘মাঙ্গা’ শব্দটি মূলত জাপানে নির্মিত এবং প্রকাশিত বিভিন্ন কমিক বই, ব্যঙ্গ চিত্রায়ন ও গ্রাফিক উপন্যাসের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি জাপানের যেকোনো বয়সী ও শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয়। বিগত এক যুগ ধরে বাংলাদেশেও সমানতালে রাজত্ব করে যাচ্ছে জাপানিজ মাঙ্গা।
বাংলাদেশে মাঙ্গাপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় থাকা মাঙ্গাগুলোর প্রায় সবই জাপানিজ ভাষা থেকে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত। যদিও সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেসব অনূদিত মাঙ্গার সাথে জাপানের সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই। কপিরাইটের তোয়াক্কা না করে অনেকেই বিনা অনুমতিতে অনুবাদ করে বাংলাদেশে প্রকাশ করে যাচ্ছেন সেসব। সেদিক থেকে বাংলাদেশের প্রথম প্রফেশনাল মাঙ্গা আর্টিস্ট হিসেবে শান্তনা ও শান্তুমা কপিরাইট পেলেন।